ট্রাইব্যুনাল থেকেই রায় ফাঁস
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটার থেকে রায়ের খসড়া কপি ফাঁস হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার। রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ.কে.এম নাসিরউদ্দিন মাহমুদ এ কথা জানান। এ সময় তিনি বলেন, ‘সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মামলার রায়ের খসড়া ট্রাইব্যুনালর থেকে ফাঁস হয়েছে। এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় একটি জিডিও করা হয়েছে।’
রেজিস্ট্রার বলেন, ‘সার্বিক বিবেচনায় প্রাথমিকভাবে এটি অনুমান করা হচ্ছে যে, কথিত খসড়া রায় ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটারে কম্পোজ করার পর তা কোন না কোনভাবে (লিকড) ফাঁস হয়েছে।’
শাহবাগ থানা জিডি নাম্বার ৮৫ তাং ০২-১০-১৩ তে উল্লেখ করা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রচারিত সমস্ত রায় ট্রাইব্যুনালেই প্রস্তুত হরা হয়। রায় ঘোষণার পূর্বে রায়ের আংশিক কপি অন্য কোনোভাবে প্রকাশের সুযোগ নেই। কিন্তু তার পরেও কথিত খসড়া রায়ের অংশ কীভাবে ইন্টারনেটে প্রচারিত হল বা কীভাবে ট্রাইব্যুনাল হতে খসড়া রায়ের অংশ বিশেষ ফাঁস (লিকড) হলো তা উদ্বেগের বিষয়।’ তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার প্রতি হুমকিস্বরপ।’
উল্লেখ্য, ঘোষিত রায় ( www.tribunalleaks.be ) এ সাইটে পাওয়া রায়ের মধ্যে মিল আছে বলে দাবি করা হচ্ছে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার থেকে। তিনি বলেন, ‘তদন্তের পরে ঘটনার সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সত্য বেরিয়ে আসবে এবং এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করা যাবে। ট্রাইব্যুনালে কর্মরত কেউ যদি এই অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকেন তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, প্রকাশিত রায়ের সঙ্গে মূল রায়ের খসড়ার কিছু সাদৃশ্য রয়েছে। কিন্তু এটি আদৌ কোনো রায় নয়, যা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল।’
রেজিস্ট্রার বলেন, ‘কথিত ফাঁস হওয়া খসড়া রায়ে কোন অনুচ্ছেদ নম্বর উল্লেখ নেই। অথচ ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত রায়ে অনুচ্ছেদ নম্বর উল্লেখ আছে। একটি সংঘবদ্ধ দুষ্টচক্র ট্রাইব্যুনাল ও এর বিচারিক কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এই অপকর্মটি করেছে। যারা এই অপকর্মে সুবিধাভোগী।’
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রেজিস্ট্রার আরো বলেন, ‘গতকাল রায় ঘোষণার পর অভিযুক্ত সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী এবং তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা মিডিয়াকে জানান যে, আনুষ্ঠানিকভাবে রায় ঘোষণার পূর্বেই তা ইন্টারনেটে কিছু ওয়েবসাইটে পাওয়া গেছে। তারা দাবী করছেন, যে ওই রায় আইন মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটারে সংরক্ষিত আছে।’
তিনি বলেন, ‘সালাহউদ্দিন কাদের আইনজীবী কোর্টের অফিসার হিসেবে তার দায়িত্ব ছিল কোন কোন ওয়েবসাইটে কথিত খসড়া রায় প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের নজরে আনা। কিন্তু তিনি তা না করে আনুষ্ঠানিকভাবে রায় ঘোষণার পর কথিত খসড়ার কপি দেখিয়ে মিডিয়ার সামনে দাবি করেন যে রায় আগেই লিকড হয়েছে। এটি একটি ডিকটেটেড রায়।’ আইনজীবীর এ ধরনের বক্তব্য উদ্দেশ্যমূলক ও অসদাচরণ বটে। এছাড়া এ ধরনের বক্তব্য ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্তেরই অংশ বলে উল্লেখ করেন রেজিস্ট্রার।