কথায় কথায় আদালত অবমাননার ভয়
রিপোর্টার,এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কথায় কথায় (কন্টেমড) আদালত অবমাননার ভয় দেখায় বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পরে সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহাবুব হোসেনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হচ্ছে এমন খবরে সুপ্রিমকোর্টেরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি এ সময় একটি পত্রিকার কিছু অংশ পাঠ করে বলেন, যে আইনজীবী খন্দকার মাহাবুব হোসেনের বক্তব্য সম্বলিত অংশ ট্রাইব্যুনালে বিচারপতিদের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি বিষয়টি ভালো করে পড়ে দেখেননি। কারণ এখানে স্পষ্ট করে তিনি বলেছেন যে প্রহসনের বিচারের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তাতে আদালত অবমাননার কিছু দেখছি না। এ সময় তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল কথায় কথায় আদালত অবমাননার ভয় দেখায়।
তিনি বলেন, যারা আইনজী্বী ও বিচার বিভাগের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়, তাদেরকে সতর্ক করে বলছি আপনারা আইনজীবী ও বিচার বিভাগকে ভাগ করবেন না। এই সব ইন্ধন থেকে বিরত থাকুন। এ সময় সমিতির পক্ষ থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ঘোষণার আগে রায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশের বিষয় তদন্তের জন্য সাবেক একজন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে বুধবার দুপুরে আয়োজিত এক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে সমিতিরি পক্ষে দাবি পড়ে শোনান সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এই সাধারণ সভায় বারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবী খোকন বলেন, সাবেক একজন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করে এই ঘটনার তদন্ত করতে হবে।
পরে রেজ্যুলেশনে বলা হয়, মঙ্গলবার একটি রায় ঘোষণার আগেই ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় দেশে-বিদেশে উচ্চ আদালতসহ বিচার ব্যবস্থার প্রতি ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে জনমনে। এর ফলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি অশ্রদ্ধা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশের একজন সাবেক প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন রায় নিয়ে মতামত ব্যক্ত করায় তার বিরুদ্ধে কয়েকজন প্রসিকিউটর এবং অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় কর্মকর্তাদের ষড়যন্ত্রমূলক আচরণ করায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় এবং যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের কতিপয় প্রসিকিউশন কর্মকর্তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যে কোনো উদ্যোগ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানানো হয়।
খোকন বলেন, রায় ঘোষণার আগে কীভাবে এটা ইন্টারনেটে এসেছে তা জাতি জানতে চায়। আমরা স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া চাই। খন্দকার মাহবুব হোসেন সেটাই বলেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় কলুষিত করেছে। মনে হয়, গণজাগরণ মঞ্চ যে রায় দেয়, তা এখানে কার্যকর হয়। কী রায় হবে, তার সম্পূর্ণ এখতিয়ার বিচারকের।
এর আগেও স্কাইপ সংলাপ নিয়ে পত্রপত্রিকায় বিচার হয়েছে। নাসিম সাহেব চেয়ারম্যান ছিলেন। স্কাইপ সংলাপ করেছেন তিনি এখনও বিচারক হিসাবে রয়েছেন। মানিক সাহেব আমার ভাই এম ইউ আহমেদ হত্যার সঙ্গে জড়িত। অথচ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে প্রমোশন দিয়ে আপিল বিভাগে নেওয়া হয়েছে। যদি আপনারা ২৫ অক্টোবরের আগে পালিয়ে না যান তাহলে অবশ্যই ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হবে বলেও খোকন উল্লেখ করেন।