ওষুধ বিক্রি বন্ধ রেখে অকারনে ধর্মঘট
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দোকান সিলগালা, গ্রেপ্তার ও জরিমানার প্রতিবাদে সারা দেশে ওষুধের দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘট করছে ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মিটফোর্ড ও বাবুবাজার, শাহবাগ ও মালিবাগের ওষুধের মার্কেট ঘুরে দেখা যায় কোনো ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা খোলেননি। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে একই খবর পাওয়া গেছে।
হাসপাতালগুলোর নিজস্ব ফার্মেসি খোলা থাকলেও সেসব দোকানে দেখা যায় প্রচণ্ড ভিড়।
এদিকে চরম ভোগান্তিতে পড়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওষুধ কিনতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
তারা বলছেন, যেখানে হরতালের মধ্যেও ওষুধের দোকান খোলা থাকে, সেখানে সারা দেশে এভাবে অত্যন্ত জরুরি এ সেবা বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আর তাছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ ও অবৈধ ওষুধ বিক্রি করে ধরা পরে যাওয়ায় আবার ধর্মঘট কিসের?
বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির উপ সচিব মনিরুল ইসলাম এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দেশের সব ফার্মেসি বন্ধ থাকবে। আজ ধর্মঘট পালনের পর বৈঠক করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”
একই কারণে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড পারফিউমারি অ্যাসোসিয়শনের ব্যবসায়ীরাও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দোকান বন্ধ রেখেছেন।
মনিরুল দাবি করেন, সারা দেশেই ওষুধ ব্যবসায়ীরা তাদের এই ধর্মঘটের সঙ্গে আছেন। সকালে দুয়েকটি স্থানে ফার্মেসি খুললেও সমিতির ভয়ে তারা বন্ধ করে দিয়েছেন।
“নোখায়াখালীতে একটি দোকান খুলেছিল। সমিতির লোকজনের ভয়ে পরে সেটি বন্ধ করে দিয়েছে।”
গত ২৮ সেপ্টেম্বর মিটফোর্ড-বাবুবাজারের সমিতি মার্কেট, ইউসুফ মার্কেট, আলী মার্কেট, নায়না মার্কেট, খান মার্কেট, নুরপুর মার্কেট, ঢাকা মার্কেট ও সুরেশ্বর মার্কেটে অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ও অবৈধ ওষুধ জব্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ২৮টি ওষুধের দোকান সিলগালা এবং এক কোটি ২৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আটক করা হয় ১০৩ জনকে।
এর প্রতিবাদে মিটফোর্ড ও বাবুবাজার এলাকায় প্রায় ১৫টি ওষুধের মার্কেটে আড়াই হাজারের বেশি দোকান দুই দিন ধরে বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখান ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
সোমবার বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কার্যালয়ে ওষুধ ব্যবসায়ীদের বৈঠক থেকে বৃহস্পতিবার সারা দেশে ধর্মঘটের এই সিদ্ধান্ত হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে লতিফুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে মিটফোর্ড-বাবুবাজার এলাকায় একটি ইনজেকশনের খোঁজে উদ্বিগ্ন হয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
তিনি জানান, তার বোন শিল্পী বেগম মিটফোর্ড হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি। বৃহস্পতিবার তার ‘সিজার’ হওয়ার কথা, কিন্তু দোকান বন্ধ থাকায় তিনি ওষুধ পাচ্ছেন না।
মিটফোর্ড সপাতালের ভেতরে এনায়েত মেডিকেল হল খোলা থাকলেও সেখানে তিনি প্রয়োজনীয় ইনজেকশনটি পাননি বলে জানান।
এনায়েত মেডিকেল হলের সামনে গিয়ে দেখা যায় ওষুধ কিনতে আসা মানুষের ব্যাপক ভিড়।
এই দোকানের মালিক সেন্টু মিয়া এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, বাইরের দোকান বন্ধ থাকায় ভিড় সামলাতে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও সব ওষুধ না থাকায় অনেক ক্রেতাকে বাইরে ছুটতে হচ্ছে।