দেশবাসীকে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তির দোসরদের বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় ইউনিটের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগ করেছেন- তারা সরকারে থাকলেই দেশের উন্নতি হয়। ‘উড়ে এসে যারা জুড়ে বসে’, তারা কখনো দেশের উন্নতি করতে পারে না।
“পরাজিত শক্তির দোসররা যখন ক্ষমতায় থাকে তখন তারা দেশকে উন্নত করতে চায় না। রাষ্ট্র ব্যর্থ হোক সেটাই তারা চেষ্টা করে। মনে হয় যেন পরাজয়ের প্রতিশোধই তারা নিতে চায়।”
এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ‘উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা’ হিসাবে গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
এরপর ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল ক্যাম্পাসেই পাঁচ একর জমির ওপর ৬০০ শয্যার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ নামে ১০ তলা এই ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর এক যুগ পর বৃহস্পতিবার তিনি সেই ভবনের উদ্বোধন করলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি-জায়ামাত জোট ক্ষমতায় এসে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও এ অচলাবস্থার অবসান হয়নি।”
এ হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ না করায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সমালোচনাও করেন তিনি।
ঠাট্টার সুরে শেখ হাসিনা বলেন, “খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানাই কাজ শেষ করে হাসপাতালটির উদ্বোধন না করার জন্য। উনি সব কাজ আমার জন্য রেখে দিয়েছেন। তাই আজ আমি এর উদ্বোধন করতে পারলাম।”
জনগণের চিকিৎসা সেবায় আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়েও অনুষ্ঠানে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখন দেশের স্বাস্থ্যখাতসহ সব খাতকে গুরুত্ব দিয়েছে। মানুষের মাথাপিছু আয়ও বেড়ে গেছে।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়ায় কঠোর সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “বিএনপি মনে করেছিল কমিউনিটি ক্লিনিক চালু থাকলে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে। বন্ধ করে দেয়ার পারেও জনগণ আওয়ামী লীগকেই বিজয়ী করেছে। আমরা সরকার গঠন করেছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল’। বাংলাদেশকে ‘দক্ষিণ এশিয়ার মান বাহক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন এখন তথ্য-প্রযুক্তির নিবিড় যোগাযোগের মধ্যে এসেছে।
“আমাদের মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৪৪ মার্কিন ডলার। দেশে কর্মসংস্থান বেড়েছে। প্রায় ৫ কোটি মানুষ দরিদ্র থেকে মধ্যবিত্তে উন্নীত হয়েছে। আমরা রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলস কাজ করছি।”
স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকির, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাংসদ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার শেফায়েত উল্লাহ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।