ফার্মেসি ধর্মঘট ৪ ঘণ্টা কমল

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সাধারণ মানুষের ‘দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনা করে’ ধর্মঘট চার ঘণ্টা কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির উপ সচিব মনিরুল ইসলাম এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন,  “আমরা রাত ১০টা পর্যন্ত দেশের সব ওষুধের দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে সময় কমিয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই ধর্মঘট পালন করা হবে।”

সরকার ভেজাল ও অবৈধ ওষুধ বিক্রির দায়ে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ীদের মুক্তি এবং বন্ধ ফার্মেসি খুলে দেয়ার আশ্বাস দেয়ার পর সমিতির পক্ষ থেকে ধর্মঘট শিথিলের এই ঘোষণা এলো।

রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দোকান সিলগালা, গ্রেপ্তার ও জরিমানার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারা দেশে ওষুধ বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা।

জরুরি ওষুধ না পেয়ে  চরম ভোগান্তিতে পড়া রোগী ও তাদের স্বজনরা ব্যবসায়ীদের এই কর্মসূচির কঠোর সমালোচনা করেছেন।

তারা বলছেন, যেখানে হরতালের মধ্যেও ওষুধের দোকান খোলা থাকে, সেখানে সারা দেশে এভাবে অত্যন্ত জরুরি এ সেবা বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর মিটফোর্ড-বাবুবাজারের সমিতি মার্কেট, ইউসুফ মার্কেট, আলী মার্কেট, নায়না মার্কেট, খান মার্কেট, নুরপুর মার্কেট, ঢাকা মার্কেট ও সুরেশ্বর মার্কেটে অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ও অবৈধ  ওষুধ জব্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ২৮টি ওষুধের দোকান সিলগালা এবং এক কোটি ২৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আটক করা হয় ১০৩ জনকে।

এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু হলে দুপুরে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন ঔষধ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক।

বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “যেসব ব্যবসায়ীকে জেল জরিমানা করা হয়েছে, পরিস্থিতি শান্ত করতে তাদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আগামী সাত দিনের মধ্যে মুক্তি দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ওই অভিযানে সিলগালা করে দেয়া দোকানগুলোও খুলে দেয়া হবে।

বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাদিকুর রহমান বলেন, ধর্মঘট অব্যহত রেখেই তারা  আলোচনা করতে এসেছেন এবং ১৬টি দাবি তুলে ধরেছেন। এ নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে।

“মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে এটা ঠিক। তবে আমরা ধর্মঘটে বাধ্য হয়েছি। গত ১০ বছরে কোনো ধর্মঘটে যাইনি। কিন্তু এবার অস্তিত্বের লড়াইয়ের কারণে আমরা বাধ্য হয়েছি।”

ওষুধ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনার বিষয়গুলো আগামী সোমবারের মধ্যে সমিতির কেন্দ্রীয় ও শাখা কমিটিকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।

এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, নকল ও অবৈধ ওষুধ মানুষের জীবন হরণ করে- এ বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশের কোনো অবকাশ নেই। জনগণকে ‘জিম্মি করে’ ব্যবসা করা যে ‘সম্পূর্ণ অনৈতিক’, তাও সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন তিনি।

তবে ধর্মঘট প্রত্যাহারের কোনো চিন্তা নেই বলে দুপুরের ওই সংবাদ সম্মেলনে জানান সাদিকুর রহমান।

ওই সংবাদ সম্মেলনের দুই ঘণ্টার মাথায় ধর্মঘটের সময় কমিয়ে আনার কথা জানান কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির উপ সচিব মনিরুল ইসলাম।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ