কম দামে ভারতীয় গরু বিক্রিতে দেশি গরুর ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজধানীর পশুর হাটগুলোর অন্যতম গাবতলীতে এ বছর ছোট বড় মিলিয়ে চারটি গরুর হাট বসেছে। প্রতি বছরের চেয়ে এবার দেশি গরুর চেয়ে ভারতীয় গরু আমদানি হয়েছে অনেক বেশি। তুলনামূলকভাবে দাম কম থাকায় গতবারের চেয়ে গরু বিক্রিও বেড়েছে অনেক। আর এ কারণেই দেশি গরু নিয়ে আতঙ্কে আছেন ব্যাপারীরা।
সোমবার গাবতলীর গরুর হাট ঘুরে দেখা যায়, এখানের নির্ধারিত হাটের স্থান বা এলাকা বাইরে আশপাশের রাস্তায় এবং গলিপথেও অনেক ব্যবসায়ীকে ভারতীয় গরু বিক্রি করতে দেখা যায়। হাটগুলোর ভেতরে ভারতীয় মোটা তাজা গরুর সঙ্গে দেশি গরু পুরো দমে বিক্রি হতে দেখা যায়।
গাবতলীর হাটে গরুর দাম কম হওয়ায় ক্রেতার হাসিমুখ দেখা গেলেও শঙ্কিত দেশি গরুর ব্যাপারীরা। তারা জানান, অনেক বেশি ভরতীয় গরু আমদানীর কারণে সময় মতো বিক্রি না করলে তারা বড় ধরনের লোকসানের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তাদের অভিযোগ, এমনিতেই গরুর বাজার মন্দা। তার ওপর ভারত থেকে বেশি গরু আসায় দাম কমে গেছে। অন্যদিকে দেশি গরুর দাম একটু বেশি হওয়ায় বিক্রিও কম হচ্ছে। সবাই ছুটছে ভারতীয় মোটা-তাজা গরুর দিকে।
গাবতলী হাটে সাভার থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী রমিজহউদ্দিন এবিসি নিউজ বিডিকে জানান, তিনি এবার ২০টি গরু নিয়ে চার দিন আগে এখানে এসেছেন। ইতিমধ্যে তিনি ১০টি গরু বিক্রি করেছেন। বাকি ১০টি নিয়ে এখনো বসে আছেন। ক্রেতা অনেক, তবে দেশি গরুর চাহিদা ও বিক্রি কম বলে জানান তিনি।
গাবতলীর স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী হাসান উদ্দিন এবিসি নিউজ বিডিকে জানান, এবারের ঈদকে সামনে রেখে তিনি প্রায় অর্ধশত দেশি গরু কিনেছিলেন মফস্বলের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। তার অর্ধেক চালান ওঠা নিয়ে তিনি সন্ধিহান।
গরুর দাম সম্পর্কে তিনি জানান, গত বছরের (২০১২) তুলনায় এবার গরুর দাম কম থাকায় তাদের লাভ কম হচ্ছে। ঈদের আগে যেভাবেই হোক গরু বিক্রি করে ফেলতে হবে। তা না হলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেও জানান তিনি।
নারায়নগঞ্জ থেকে আসা ইউসুফ জানান, দাম কম হওয়ায় গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু দেশী গরুর উৎপাদন থেকে বাজারে আনা পর্যন্ত খরচ বেশি হওয়ায় দামও একটু বেশি। যারা এখানে গরু কিনতে আসেন, তারা সুস্থ-অসুস্থ বোঝেন না, দাম কম পেলেই কিনে ফেলেন।
মিরপুর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা শেখ হাবিবুর রহমান জানান, গাবতলী গরুর হাট থেকে তিনি ৪০ হাজার টাকায় (কাল রংয়ের) ভারতীয় একটি বড় গরু কিনতে পেরে অনেক খুশি। তার মতে এই গরুটির দাম গত বছর নূন্যতম ৬০ হাজার টাকা ছিল।
আমির হোসেন নামে ঢাকার এক গরু ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, ভারত থেকে যত গরু বৈধভাবে এসেছে, তার চেয়ে চোরাই পথে এসেছে বেশি। কোরবানীকে সামনে রেখে ভারতের রোগা ও অসুস্থ গরু দেশীয় বাজারে এসেছে। এসব গরুর দাম কম হওয়ায় বিক্রিও হচ্ছে বেশি। কিন্তু দেশি গরুর উৎপাদন থেকে বাজারে আনা পর্যন্ত খরচ বেশি হওয়ায় দামও একটু বেশি।