জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করবেন না
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির মধ্যেই দলের নেতা-কর্মীদের আগামী ২৪ অক্টোবরের পর চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য তৈরি হতে বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
“কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল খেলা হয়ে গেছে। আর মাত্র সাত দিন আছে। এবার ফাইনাল রাউন্ডের খেলা। এই খেলায় আমাদের জয়ের কোনো বিকল্প নেই,” সোমবার ঢাকা মহানগর বিএনপির এক সভায় বলেন তিনি।
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া ২৪ অক্টোবরের পর সরকার পতন আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাচনের দিন গণনার শুরুতেই সরকার পতন আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। সেদিন ঢাকায় বিএনপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগও সমাবেশ ডাকায় সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিরোধী দলকে প্রতিহতে আওয়ামী লীগের রাজপথে থাকার ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা মহানগর বিএনপির সভায় সাদেক হোসেন খোকা বলেন, “আওয়ামী লীগ হামলা চালালে তার পাল্টা জবাব দেয়া হবে। দা-কুড়াল-বল্লম-লাঠি-সোঁটাসহ যা কিছু আছে, তা নিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের ফলে এখন সংসদের মেয়াদ শেষের আগের ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২৫ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচন হবে। এই সময়ে সরকারে থাকবে আওয়ামী লীগ এবং সংসদও বহাল থাকবে।
সংসদের চলতি অধিবেশন ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে কার্যউপদেষ্টা কমিটির। এর মধ্যে নির্দলীয় সরকার পদ্ধতির বিল তুলে তা সংসদে পাস করার দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি।
কিন্তু শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ নেতাদের জানিয়েছেন, নবম সংসদের এই অধিবেশন অব্যাহত রাখা হবে।
২৪ অক্টোবরের পর সরকারের বৈধতা থাকবে না দাবি করে বিএনপির বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, এই সংসদের মেয়াদ ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত সংসদ অধিবেশন চালানো যাবে।
সরকারি দল ও বিরোধী দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে ২৫ অক্টোবর নিয়ে জনমনে আশঙ্কার মধ্যে মির্জা ফখরুল দলীয় নেতা-কর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিলেন।
নয়া পল্টনে ঢাকা মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে ২৫ অক্টোবরের জনসভার এই প্রস্তুতি সভায় তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “মনে রাখতে হবে- এই খেলায় জয় হলে আমরা টিকে থাকব, নইলে অস্তিত্ব থাকবে না।”
বিভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, “আমাদের পথ, রাস্তা ও লক্ষ্য একটাই- দুর্বার গণ আন্দোলন, দুর্বার গণ আন্দোলন, দুর্বার গণ আন্দোলন। এজন্য সব বিভেদ-দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া চাই।”
২৪ অক্টোবরের পর সংসদ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি নেতা বলেন, “সরকার বুঝতে পেরেছে, তারা ক্ষমতায় না থাকলে তাদের দল আওয়ামী লীগ থাকবে না। তাই তারা ভয় পেয়ে এখন বলছে, সংসদ থাকবে-সংসদ চলবে।”
“ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের অনেকে দেশের বাইরে চলে গেছে। পত্রিকার খবর বেরিয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেক নেতা তার পরিবারকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন।”
“আমরা সরকরকে স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, অনেক এদিকওদিক করেছেন। শেষ মুহূর্তে এসে জনগণের সঙ্গে আপনারা বেঈমানি করবেন না। তাহলে পালাবার পথ পাবেন না,” হুঁশিয়ারি দেন তিনি।