১৫তম সংশোধনী দায়ী বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের জন্য

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন- ‘দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট ও অস্থিতিশীলতার জন্য সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী দায়ী ।’ তিনি বলেছেন, ‘১৫তম সংশোধনী সংসদীয় বিশেষ কমিটির সুপারিশে হয়নি। এটি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মনগড়া সিদ্ধান্তে। তাই এ সংশোধনী অসাংবিধানিক ও অবৈধ।’ শনিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের সেমিনার কক্ষে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘উদ্ভূত সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে করণীয়’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে  এ সব কথা বলেন তিনি। সংলাপ সঞ্চালনা ও সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন- ‘আমরা সম্মিলিতভাবে আত্মহত্যার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের গণতন্ত্র খাদে পড়তে যাচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যদি এর কারণ খুঁজতে চাই তাহলে পাবো, এর জন্য দায়ী নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই দলের অনড় অবস্থান। এই অনড় অবস্থানে জন্য দায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।”

তিনি ১৫তম সংশোধনীর বিভিন্ন পর্যায় তুলে ধরে বলেন, ‘২০১০ সালের ২১ জুলাই প্রথম ১৫ জন সদস্য নিয়ে সংবিধান সংশোধনী কমিটি গঠন করা হয়। তারা ২৭ টি মিটিং করেন। মিটিং শেষে ২০১১ সালের ২৯ মার্চ বিদ্যমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অপরিবর্তিত রাখার সুপারিশ করা হয়।’

সংবিধান সংশোধনী কমিটির বিভিন্ন সদস্যদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন- ‘তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন-এটা সেটল ইস্যু, এটা পরিবর্তন করার দরকার নেই। আমির হোসেন আমু বলেছিলেন-তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেভাবে আছে সেভাবেই রাখা উচিত। ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছিলেন-সংবিধানে তিন মাস নির্দিষ্ট করে দেওয়া যেতে পারে। অ্যাডভোকেট আমীর খসরু বলেছিলেন-এমন কিছু করা ঠিক হবে না যা বিতর্ক সৃষ্টি করে। রাশেদ খান মেনন বলেছিলেন-তত্ত্বাবধায়ক পরিবর্তনের দরকার নেই। বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমিন বলেছিলেন-তত্ত্বাবধায়ক সংশোধনের দরকার নেই। কমিটির কো-চেয়ারম্যান প্রস্তাব করে বলেছিলেন-তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করার দরকার নেই।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু ২৭ এপ্রিল, ২০১১ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংবিধান সংশোধন কমিটি দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী বলেন- জনগণ আর অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা দেখতে চায় না।’ ১০ মে কমিটি আবার বলে, শর্ত সাপেক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। ২৯ মে সংবিধান সংশোধনী কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার পক্ষে সুপারিশ করে। ৩০ মে, কমিটি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে সবকিছু উল্টে যায়, সবকিছু বদলে যায়। ২০ জুন কমিটি নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের সুপারিশ করে। ২৫ জুন ২০১১ তা কেবিনেটে ও ৩০ জুন সংশোধনীতে তোলা হয়।’

বদিউল আলম মজুমদার বলেন- ‘এটা আমার বক্তব্য নয়। এটা সংকটের ধারাবাহিক সৃষ্টির প্রক্রিয়া। এটা স্পষ্ট সংকট এক ব্যক্তির মনগড়া সিদ্ধান্তে হয়েছে। তাই এই সংশোধনী অবৈধ।’ তিনি আরো বলেন- ‘সংবিধানের ৭(খ) অনুচ্ছেদ যা অপরিবর্তিত রাখার বিধান করা হয়েছে এটাও অসাংবিধানিক।’

আলোচনায়  অংশ নেন সমকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ও সিপিবি সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ জাফর আহমেদ ।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ