সরকার আমন্ত্রণ জানালেই সংলাপ হবে

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সংলাপের জন্য বিএনপি কোনো উদ্যোগ নেবে না। এর জন্য সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান চাই, কিন্তু সরকার ইতিবাচকভাবে সাড়া দেয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে টানা ৬০ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিন সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘সরকারের উচিত ছিল অনেক আগেই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া। তারা তা করেনি বলেই এই সঙ্কট আরো প্রকট হয়ে আজ এ অবস্থা হয়েছে। আমরা বাধ্য হয়েছি হরতাল কর্মসূচি দিতে।

প্রধানমন্ত্রীর ফোনের পর এখন সংলাপের জন্য বিএনপি উদ্যোগ নেবে কি-না এবং বিরোধীদলীয় নেতা সরকারকে অবৈধ বলা প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা রাজনৈতিক ভাষায় অনেক কথাই বলি। এখন আমরা সংলাপ কার সঙ্গে করবো? যে সরকারের থাকবে তার সঙ্গেই হবে। ন্যাচারালি এই উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। সংলাপের জন্য বিরোধী দলকে তাদেরই আমন্ত্রণ জানাতে হবে।

অবিলম্বে গুলি করে হত্যা করা, নির্যাতন, গ্রেপ্তার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, কার্যকর সংলাপের মাধ্যমে সঙ্কট নিরসনের ব্যবস্থা নিন।

গণভবনে খালেদা জিয়ার খাবারের মেন্যু সম্পর্কে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান নয়। খাবার কোনো মুখ্য উদ্দেশ্য নয়, রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে আলোচনার জন্য বসাটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান প্রত্যাখ্যান করার পর বিএনপি আবার সংলাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এবার খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করবেন- এরকম খবর যখন গণমাধ্যমে আসছে তখন এমন কথা বললেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

এসময় মির্জা ফখরুল সারাদেশে হরতালের চিত্র তুলে ধরেন। হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংর্ঘষ, গ্রেপ্তার, হতাহত, নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলাসহ নানা সহিংসতার অভিযোগ তোলেন তিনি।

সংসদে একমাত্র স্বতন্ত্র এমপি ফজলুল আজীমকে নির্বাচনকালিন সর্বদলীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী করার ব্যাপারে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার প্রস্তাব প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নাজমুল হুদা বিএনপির কেউ নন। তার প্রস্তাব ব্যক্তিগত। এ বিষয়ে আলোচনার সময় এখন নয়।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ২৫ অক্টোবরের পর থেকে সরকার বিরোধী দলের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালাচ্ছে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ২০১০ সালের ১০ জুনের আগে বিএনপি কোনো হরতাল দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে অসংখ্য ইস্যু তৈরি হয়েছে। কিন্তু সচেতনভাবেই আমরা হরতাল দিইনি।

এছাড়া ১৮ দলের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুরসহ সারাদেশে পুলিশ নির্বিচারে মিছিলে গুলি করছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে ঢাকা শহরে নিহত ৩ জন, গ্রেপ্তার ৭০০, মামলার আসামি ১ হাজার ৭০০ এবং দুই দিনে সারাদেশে ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। আগামী ৩০ অক্টোবর ঝিনাইদহে ১৮ দল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিভভী, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহিন, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মনির খান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদ প্রমুখ।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ