গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালাচ্ছে সরকার
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সুপরিকল্পিতভাবে সরকারই গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজের) একাংশের নেতৃবৃন্দ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে দৈনিক সংগ্রামের ওপর উপর্যপুরি গুলি ও বোমা হামলার প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এই মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, সরকার আবারও ক্ষমতায় আসার জন্য এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এই দায়ভার তারা এড়িয়ে যেতে পারেন না। গণমাধ্যমের ওপর হামলার দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকা সত্ত্বেও কেন দৈনিক সংগ্রাম ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা হচ্ছে তার জবাব আপনাদেরকে দিতে হবে।’ অবিলম্বে তিনি সকল গণমাধ্যমের ওপর হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, ‘গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর যারা হামলা করেছে তাদের বিচার জনগণ করবে। কারণ গণমাধ্যম জনগণের, সরকারের নয়।’
সরকার একদলীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার একদলীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা করে ক্ষমতায় চিরস্থায়ীভাবে টিকে থাকার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আর এই কারণেই সরকার আমার দেশ, ইসলামিক ও দিগন্ত টিভি বন্ধ করেছে।’
সরকারকে উদ্দেশ্য করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি আব্দুল হাই শিকদার বলেন, ‘আজকের এই বিক্ষোভ সমাবেশ আপনাদের পতনের শেষপত্র। আমরা সাংবাদিক সমাজ আর আপনাদের ক্ষমতায় দেখতে চাই না। তাই যত তাড়াতাড়ি পারেন বিদায় হন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য এই সরকারের বিদায় হতেই হবে, অন্যথায় কখনোই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে না।’
তথ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতা সম্পর্কে সংযত ভাষায় কথা বলুন। আপনি কি লন্ডনের হামলার কথা ভুলে গেছেন? যদি ভুলে না যান তাহলে এখনো সময় আছে সংযত হন।’
তিনি অবিলম্বে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর পদত্যাগ ও বন্ধ গণমাধ্যম এবং সাংবাদিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, ‘সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। তাই তারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আর এ কারণেই গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করছে তারা।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে সাংবাদিকরা বোমাবাজদের উপযুক্ত জবাব দেবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ডিইউজের একাংশের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান বলেন, ‘সাগর-রুনির হত্যাকারীদের আপনি গ্রেফতার করতে পারেন না কিন্তু আপনার পেটোয়া বাহিনী দিয়ে সাংবাদিকদের সমাবেশে বাধা দিতে পারেন।’
অবিলম্বে সাগর-রুনি হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করা না হলে সাংবাদিক সমাজ এক দফার আন্দোলন দিতে বাধ্য হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।’
সরকার অবৈধ হয়ে যাওয়ার পরও গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালাচ্ছে উল্লেখ করে সরকারের উদ্দেশ্য ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, ‘হামলা চালিয়ে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে পারবেন না এবং ক্ষমতায়ও টিকে থাকতে পারবেন না।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি রুহুল আমীন গাজীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাভেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুল আমীন রোকন, সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, দিগন্ত টিভির ইউনিট চিফ ইমরান আনসারি প্রমুখ।