সোমবার থেকে ৩ দিন হরতাল
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আবারো টানা ৬০ ঘন্টার হরতাল কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয় জোট। আগামী ৪ নভেম্বর (সোমবার) ভোর ৬টা থেকে ৬নভেম্বর(মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা হরতালের ডাক দিয়েছে তারা।
শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেলা সাড়ে ১১টায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ জরুরি মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেওয়া, জনগণের পছন্দের সরকার গঠনে ভোটাধিকারসহ মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের বিকল্প নেই। এ দাবি এখন সমগ্র জাতির।’
তিনি বলেন, ‘সরকার তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার দুরভিসন্ধিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা সংযোজন করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের সব রাজনৈতিক দল, সব পেশাজীবী, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মতামতকে উপেক্ষা করে, বিরোধীদলকে বাদ দিয়ে সরকার একতরফা নির্বাচন করার পথে এগোতে চায়। রাষ্ট্রপরিচালনার সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থতা, সীমাহীন দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, বিরোধী দলের উপর নজিরবিহীন নির্যাতন, হত্যা, গুমসহ বিভিন্ন অপরাধে সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘১৮দল নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকাররের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু সরকার বিরোধী মতকে উপেক্ষা করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যাস্থ হয়ে পড়েছে।’
‘সরকার মুখে সংলাপের কথা বললেও মূলত তারা সমঝোতা চায় না। আর সেই কারণে নানা ধরনের নেতিবাচক নাটক তৈরি করে সংলাপ যেন না হয় সেই আবহ তৈরি করছে’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘২১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে ঐক্যের আহবান জানিয়ে ১৮ দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা তুলে ধরেছিলেন। সেই রূপরেখার আলোকে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছিলাম। সংসদে রূপরেখা উপস্থাপন করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আলোচনা শুরু করারও আহবান জানানো হয়েছিলো। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করে সেটি নাকচ করে দিয়েছে। এজন্য বাধ্য হয়ে ১৮দল আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এ সময় দুই নেত্রীর ফোনালাপ প্রকাশ করে সরকার নৈতিকতা ও বেআইনি কাজ করেছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।
এর আগে বেলা এগারোটায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ১৮ দলের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. রিদউয়ান উল্লাহ শাহিদী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডা আহমেদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, এনপিপি মহাসচিব ড. ফরিদুজ্জমান ফরহাদ, এলডিপি মহাসচিব আলমগীর মজুমদার, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মুসলীম লীগের মহাসচিব ডা. জুলফিকার আলী চৌধুরী, ডিএলের খোকন চন্দ্র দাস, ইসলামী ঐক্যজোটে মুফতি মোহাম্মদ তৈয়ব।