ফোনালাপ ফাঁস তথ্যমন্ত্রীর দোষ
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর বলেছেন, যে অভিযোগে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল একই অভিযোগে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু অভিযুক্ত। কারণ খালেদা জিয়ার অনুমতি না নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তার কথা প্রকাশ করেছেন। কাজেই তথ্যমন্ত্রীর সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘আক্রান্ত গণমাধ্যম : সংকটের আবর্তে দেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিলে তিনি এ সব কথা বলেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ এ গোলটেবিলের আয়োজন করে।
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একদিকে সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেন; আর একদিকে গণতন্ত্রবিরোধী কাজ করেন। আওয়ামী লীগের চারিত্রিক বৈশিষ্টই এমন। গণতন্ত্রকে কীভাবে ধ্বংস করা যায় তার সব কাজ তারা চালিয়ে যান। আওয়ামী লীগ গত ৫ বছর ধরে ’৭৫ এর মত যারা ভিন্ন মতাবলম্বী তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। ফলে আজকে শুধু গণমাধ্যম নয় সমগ্র বাংলাদেশের অস্তিত্বই আক্রান্ত ও হুমকির সম্মুখীন।
তিনি বলেন, আজ শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চান। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তা চায় না। কারণ গত ৫ বছর ধরে তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এখন তারা ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখার স্বপ্ন দেখেন। ফখরুল আরো বলেন, যখন মানবাধিকার ও গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখিন হয়েছে; তখন ফরহাদ মজহার সামনে থেকে কথা বলেছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন বলেই আজকে ফরহাদ মজহারকে দোষারোপ করা হচ্ছে। যারা ফরহাদ মজহারের বিচার চান তারা একবারও সাগর-রুনির হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন না।
ফরহাদ মজহারের বক্তব্য সম্পূর্ণ প্রকাশ করা হয়নি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, একটি বিশেষ মহল সুপরিকল্পিতভাবে ফরহাদ মজহারকে হয়রানি করতে চাচ্ছে। আর সেই কারণে তার সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রকাশ না করে তাকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে।
বিশিষ্ট কলামিস্ট ও কবি ফরহাদ মজহার বলেন, একটি টিভি চ্যানেল যারা নিজেদের সাংবাদিক হিসাবে দাবি করেন তারা আমার বক্তব্য কেটে জোড়াতালি দিয়ে বিকৃত করেছে। পটকা, ককটেল বা ইটও কেউ যেন গণমাধ্যমে না ছুঁড়ে আমি তা চাই। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শুধু প্রধানমন্ত্রী দায়ী নন, আমরা সবাই দায়ী। কারণ আমরা এক হতে পারিনি। কিন্তু আগামীদিনে একটি রক্তাক্ত পরিস্থিতি আসছে, তাই আমাদের সবাইকে একতাবদ্ধ হতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, গণমাধ্যমের ওপর হামলার উস্কানিদাতা হিসাবে যারা কাজ করছে তাদের প্রতি আমি তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে যে সব পত্রিকার সম্পাদক একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন তাদের প্রতিও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করি। ফরহাদ মজহারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা হওয়া উচিত আপনার এমন বক্তব্য বিভিন্ন মিডিয়া প্রকাশ করেছে। যদি আপনি এ বক্তব্য দিয়ে থাকেন তাহলে আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। কারণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণমাধ্যমের ওপর হামলা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ সভাপতি আব্দুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর ড. আফম ইউসুফ হায়দার, বাংলাদেশ ফোডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী ও সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ।