আলোচনার মাধ্যমেই সঙ্কট নিরসন

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা তো দেখছি আলোচনার দিকে যাচ্ছে, কাজেই আমি আশা করি সরকারি দল এবং বিরোধীদলের মধ্যে আলোচনার মধ্য দিয়েই বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন হবে।’ শনিবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকস্থ জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রতিবন্ধী স্কাউটদের নিয়ে পাঁচদিনব্যাপী পঞ্চম জাতীয় স্কাউট অ্যাগোনোরির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। তবে বিরোধী দল নির্বাচনে আসতে না চাইলে কি হবে এমন প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করতি রাজি হননি স্পিকার।

অ্যাগোনোরীতে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে স্পিকার বলেন, ‘স্কাউটিংয়ের মাধ্যমে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিকাশ লাভে একটি অনন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সমাজে কোনো অংশই যাতে পিছিয়ে না থাকে। সকলেই যেন সমানভাবে এগিয়ে আসতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জাতীয় সংসদে প্রতিবন্ধীদের সহায়ক বিভিন্ন আইন পাশসহ সরকার নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এতে তারা বিভিন্নভাবে বিকশিত হতে পারবে। স্কাউটিং শিক্ষার্থীদেরকে পারস্পরিক বন্ধুত্ব, আত্মপ্রত্যয়ী ও স্বাবলম্বী হতে শেখায়। স্কাউটিং দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশ যেমন- ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে শেখায়।’

শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘একজন সুন্দর মানুষ ও সুন্দর জীবনের অধিকারী হওয়ার জন্য তরুণদের দেশের ও পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরির মাধ্যমে একসঙ্গে দেশ ও দশের জন্য কাজ করার শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশে এ স্কাউট অ্যাগোনরি প্রশিক্ষণ কর্মশালা। আর দেশ গড়ার কাজে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নরা (প্রতিবন্ধী) অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে।’

শনিবার সকালে স্পিকার প্রধান অতিথি হয়ে জাতীয় স্কাউট অ্যাগোনরি-২০১৩-এর উদ্বোধন করেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অ্যাগানোরী সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি সুরাইয়া বেগম এডিসির সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অ্যাগোনরি চিফ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, স্কাউটসের এক্সটেনশন স্কাউটিং বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমা শামস, অ্যাগোনোরি প্রধান মোহাম্মদ মহসিন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নুরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

এর আগে প্রধান অতিথিকে অভ্যর্থনা, অ্যাগোনরি ব্যাজ ও স্কার্ফ প্রদান করা হয় এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) স্কাউট সদস্যরা ডিসপ্লে ও নৃত্য পরিবেশন করে। স্কাউট অ্যাগোনরিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ৮৫টি সংস্থা অংশগ্রহণ করেছে।  দিনব্যাপী অ্যাগোনরিতে ছয় ধরনের চ্যালেন্স ও তিন ধরনের খেলায় অংশগ্রহণ করবে প্রতিটি সংস্থা। অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে সুইট বাংলাদেশ সংস্থা দেশের গানের সঙ্গে নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিবন্ধী স্কাউটদের জন্য আয়োজিত সমাবেশটি শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে, যা ৫ নভেম্বর শেষ হবে।

পঞ্চম জাতীয় স্কাউট অ্যাগোনরির উপ-কমিটির সদস্য সচিব মো. ফরহাদ হোসেন জানান, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন স্কাউটদের দক্ষতা ও পারদর্শিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯০ সালের ১৩-১৬ ফেব্রুয়রি কুমিল্লা জেলা স্কুলে প্রথম অ্যাগোনরি অনুষ্ঠিত হয়।

গাজীপুর কালিয়াকৈরে মৌচাক জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১-৫ নভেম্বর অ্যাগোনরি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে বাংলাদেশের ৭৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৯শ’ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) শিক্ষার্থী এসেছে। এছাড়া কর্মকর্তাসহ ৩শ’ স্বেচ্ছাসেবক স্কাউটস রয়েছে। ওই শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ছয়টি চ্যালেঞ্জ ও তিনটি গেম যথাক্রমে- ব্যক্তিগত পারদর্শিতা বা প্রযুক্তি, স্কাউট স্কিল, বাধা অতিক্রম, ব্যক্তিগত দক্ষতা, হাইকিং ও  বন্ধু তৈরি, পঞ্চইন্দ্রিয়ের খেলা, ডিসপ্লে এবং ফানি ম্যাচ।