খালেদা হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ চান

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সর্বদলীয় সরকারে বিরোধীদলকে তাদের পছন্দ মতো মন্ত্রণালয় দেয়ার প্রস্তাব রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কিন্তু খালেদা তা চান না। তিনি চান হরতাল দিয়ে মানুষ হত্যা করতে। তিনি চান হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ।’ নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারে অংশগ্রহণের জন্য বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি সরকারে আসুন। যে মন্ত্রণালয় চাইবেন দেয়া হবে।’ মঙ্গলবার বিকেলে নওগাঁর বরেন্দ্রভূমি সীমান্ত উপজেলা পোরশার জনসভায় এ প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পোরশা ডিগ্রি কলেজ মাঠে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে। তারা মানুষকে শান্তিতে ঘুমাতে দেয় না। আর আমরা ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়।’
এসময় আওয়ামী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নৌকায় ভোট দেয়া মানে বিনামূল্যে বই পাওয়া, বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ পাওয়া, ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ভিজিডি, ভিজিএফ, গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেয়া।’ নওগাঁয় উন্নয়নের ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় একশ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল তৈরি করে দিয়েছি। নওগাঁরটার কাজ শিগগিরই শুরু করা হবে। লোহার ব্রিজের পরিবর্তে কংকিটের ব্রিজ তৈরি করা দেয়া হবে।’

আওয়ামী সরকার কৃষি, শিল্প ও উন্নয়নবান্ধব সরকার বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে কৃষক ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ পেয়েছে। তারা কীভাবে সহজে কৃজিপণ্য সার, বীজ পেতে পারেন তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি আমরা। গরিবের কাছে আওয়ামী লীগ বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করছে। বৃদ্ধ ভাতা, বিধবা ভাতা চালু করেছে।’ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশের উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। তার (খালেদা জিয়া) ছেলে আমেরিকায় মানিলন্ডারিং করে ধরা পড়েছে।’

বিরোধীদলকে সহিংসতার রাজনীতি পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেত্রীকে বলবো, আপনি আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছেন। একজন মানুষ হত্যা করতে পারে? এটা কোন ইসলাম? কোরআন শরিফ যারা পোড়ায় তারা কীভাবে ইসলামের রাজনীতি করে। এটা আমাদের লজ্জার সঙ্গে বলতে হয়।’ এর আগে নওগাঁর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। প্রায় একশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ৮৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত পোরশা উপজেলা পরিষদের ডাকবাংলো, ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয়ে মুরশিদপুর ইউপি ভবন, ৪ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যার পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে উপজেলার হাতিখোঁচা-কচুন্না খাড়ি পুনঃখনন এবং ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে মুরশিদপুর ইউনিয়নের হুন্দইল ঘাটে গার্ডার ব্রিজ, নিয়ামতপুর উপজেলার ৫শ আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টার, শহিদ পিংকু উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন, নিয়ামতপুর-নিমদিঘি-আড্ডা বাজার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, নওগাঁ টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট ভবন, ধামইরহাট উপজেলার আমইতাড়া-আগ্রাদ্বিগুন সড়কের আত্রাই নদীর ওপর প্রায় সাড়ে ৪শ মিটার গার্ডার ব্রিজ, নওগাঁ-চাঁপাই-বটতলি-গাবতলি সড়ক উন্নয়নসহ ৩টি গার্ডার ব্রিজ ও পাহাড়পুর সেতু হতে চৌমাশিয়া সড়ক সংস্কার কাজ।

এছাড়া তিনি নওগাঁ ১০০ শয্যার হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, নিয়ামতপুর থানা ভবন, বটতলি জিসি, চৌবাড়ীয়া জিসি সড়ক উন্নয়ন, নোসনাহার কেএ্যান্ডএইচ সোমনগর-ঘাটনর সড়ক উন্নয়ন, পোরশার শিবপুর জিসি সড়ক উন্নয়ন, পোরশার তেঁতুলিয়া নিতপুর ফাজিল মাদরাসা ও মোল্লাপাড়া ফাজিল মাদরাসার ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ