পিলখানা মামলায় পিন্টু ষড়যন্ত্রমূলক

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে পিলখানার বিডিআর হত্যা মামলায় মিথ্যা, অন্যায় এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডে সরকারের ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপানোর জন্যই দুরভীসন্ধিমূলকভাবে সাড়ে চার বছর পিন্টুকে আটক রাখা হয়েছে। আমরা এ প্রহসনমূলক বিচারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দ্বিতীয় বারের মতো টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর দেশ-বিদেশের বহু পত্রিকায় বর্তমান সরকারের প্রভাবশালী নেতাদের নামে অভিযোগ উঠলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ছত্রছায়া থেকে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে দমানোর চেষ্টা করছে।

বিএনপির সংসদ সদস্যদের ওপর মহিলা যুবলীগের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ছাত্রলীগ ও যুব লীগের পর এবার যুব মহিলা লীগকে মাঠে নামিয়েছে। বিএনপির সংসদ সদস্যরা সংসদ ভবন এলাকায় হরতালের পক্ষে মিছিল করলে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল ও নাজমা বেগমের নেতৃত্বে মিছিলে সশস্ত্র হামলা চালায়। সংসদ চত্বরে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও আওয়ামী লীগের এই দুই নেত্রীর নেতৃত্বে শতাধিক মহিলাকর্মী বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা চালায়।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করতেন, জনগণকে দেওয়া ওয়াদার বাস্তবায়ন কতটুকু হয়েছে, তাহলে নিজেই বুঝতে পারতেন। নির্বাচনী ইশতেহারে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার ওয়াদা না থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর গোপন ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন এবং নিজের ক্ষমতা স্থায়ী করতে সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করেছেন। তিনি একাজ না করলে আজ দেশের বর্তমান সংকট তৈরি হতো না।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তারা উথাল-পাথাল আন্দোলন করেছিলেন, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিজেরাই ধ্বংস করেছেন। আমি আশা করি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, অবাধ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।

বিরোধী দলের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য শাসক গোষ্ঠী কূটকৌশল অবলম্বন করছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। পাবনার সাথিয়ার ঘটনা সেই চক্রান্তজালেরই অংশ। সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে এখন অমানবিক নোংড়া খেলায় লিপ্ত হয়েছে।

হরতালের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, হরতালের দ্বিতীয় দিনে ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশে নিহত হয়েছে ১জন, গ্রেপ্তার ৬০০, আহত ২১শ, আসামি ৯ হাজার, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৩ জনকে সাজা দেয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহীন, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন জসিম, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা খ ম ওসমান গণি টুটুল, খন্দকার কামরুজ্জামান উৎপল, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ