রবি-সোম-মঙ্গলবার টানা ৭২ ঘন্টা হরতাল
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ এবার টানা ৭২ ঘন্টা হরতাল ডেকেছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। আগামী রোববার ভোর ৬টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত তারা এ হরতাল পালন করবে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এর আগে দু’দফায় ৬০ ঘণ্টার হরতাল পালন করে ১৮ দলীয় জোট।
শুক্রবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১৮ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ে বৈঠক শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৮দল নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকাররের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। সরকার বিরোধী মতামতকে উপেক্ষা করে তথাকথিত সর্বদলীয় সরকার গঠন করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলে একদলীয় নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। দেশের সকল রাজনৈতিক দল, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মতামতকে উপেক্ষা করছে সরকার।
তিনি বলেন, সরকার মুখে সংলাপের কথা বললেও মূলত তারা সমঝোতা চায় না। এ বিষয়ে তাদের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। এ কারণেই তারা নানা ধরণের নেতিবাচক নাটক তৈরি করছে। সংলাপ যেন না হয় সে আবহ তৈরি করছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার একদিকে হত্যা ও নির্যাতন চালিয়ে জনগণের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে চায়, অন্যদিকে সর্বদলীয় সরকারের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনো পাতানো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহন জরুরী উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের পছন্দের সরকার গঠনের জন্য ভোটাধিকার এবং মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিকল্প নেই। এ দাবি এখন সমগ্র জাতির।
১৮ দল বাধ্য হয়ে কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সভা, সমাবেশ এমনকি মানববন্ধনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে।
হরতাল দিয়ে নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করা যাবে কি না – এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অতীতে যতগুলো আন্দোলন সফল হয়েছে, সবগুলোই জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি সবসমই সংলাপ চায়।সরকারের পক্ষে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। সরকারের আন্তরিকতা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
এর আগে শুক্রবার বিকেল পৌনে ৪টায় ১৮দলের মহাসচিবরা বৈঠক করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. রিদউয়ান উল্লাহ শাহিদী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডা. আহমেদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, এনপিপি মহাসচিব ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল মালেক চৌধুরী, বিজেপি মহাসচিব সালাউদ্দিন মতিন, এনডিপি মহাসচিব আলমগীর মজুমদার, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মুসলীম লীগের মহাসচিব ডা. জুলফিকার আলী চৌধুরী, ডিএলের খোকন চন্দ্র দাস, ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি মোহাম্মদ তৈয়ব, ইসলামী পার্টির এম এ রশিদ প্রধান, পিপলস পার্টির মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন।