৮৪ ঘণ্টার হরতাল চলছে

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠাসহ বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও তাদের মুক্তির দাবিতে ১৮ দলের ডাকা টানা ৮৪ ঘণ্টার হরতাল শুরু হয়েছে রোববার ভোর থেকে। চলবে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

প্রথমে ৭২ ঘণ্টার হরতার কর্মসূচি আহ্বান করা হয়। শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে শনিবার আরো ১২ ঘণ্টা বাড়ানো হয়।

হরতালের আগের দিন শনিবার বিকেল থেকেই বিভাগীয় শহর, জেলা, উপজেলা, উপশহর, ইউনিয়ন এবং প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ককটেল বিস্ফারণ, যানবাহন ভাঙচুর,  অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধসহ বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। আদালত পাড়াতেও ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটেছে। বিকেল থেকেই নগরীরে যানবাহনের সংখ্যা কমতে থাকে। দূরপাল্লার যানও নির্ধারিত স্থানে রেখেছে। এছাড়াও রাজশাহী, সিলেট, নারায়নগঞ্জ, খুলনা, নরসিংদী, পিরোজপুর, গাজীপুর, সাভার, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, জামালপুর, মৌলভীবাজার, বগুড়া, শেরপুর, যশোর, মাগুরা, সাক্ষীরাসহ অন্তঃত অর্ধশতাধিক জেলায় বিক্ষোভ প্রতিবাদ মিছিলের খবর পাওয়া গেছে।
হরতালের সমর্থনে শনিবার বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা। মিছিল ও বাসা থেকে বিরোধী দলের বেশকিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায়ে বিরোধী জোটের নেতাদের বাসাবাড়িতেও তল্লাশী চালিয়েছে।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রিজভী আহম্মেদ শনিবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকারের পতনের শেষ সাইরেন বেজে গেছে। তাই তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে এবং আন্দোলন ঠেকাতে রাজনীতির ভোতা অস্ত্র (বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার নির্যাতন) ব্যবহার করছে। এতে সরকারের রক্ষা হবে না। এ সময় তিনি হরতাল আরো ১২ ঘণ্টা বৃদ্ধির কথা জানান। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে হরতালের নামে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশকে জিরো টলারেন্সে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হরতাল সফল করতে নিজ  দলের নেতাকর্মীদের প্রতি পৃথক পৃথক ভাবে আহ্বান জানিয়েছে জোটের শীর্ষ নেতারা।

হরতালের আওতামুক্ত : গত শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের কার্যালয়ে জোটের মহাসচিদের নিয়ে বৈঠক শেষে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি জানান, হাজীবহনকারী গাড়ী, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদ মাধ্যম, জরুরি সেবাদানে নিয়োজিত যানবাহন হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।

নয়াপল্টন কার্যালয়ে শুধু রিজভী আহম্মেদ : হরতাল ঘোষণার পর থেকেই বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয় ঘিরের রাখে পুলিশ। দলীয় নেতাকর্মীতো দূরের কথা স্টাফদেরও প্রবেশ করতে ও বের হতে দিচ্ছে না। তবে আগে থেকেই অবস্থান করা কার্যালয়ের স্টাফরা সেখানে অবস্থান করছে। গত শুক্রবার রাতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করার পর রিজভী আহম্মেদকে সেখানেই অবরুদ্ধ করে রাখে। বিরোধী দলের কার্যালয়ের সামনে গরমপানির গাড়ী, রায়ডকার, প্রিজনভ্যান, রিকুইজেশন করা মাইক্রোবাস রাখা হয়েছে। পোষাকধারী ও সাদা পোষাকের শতশত পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে দলীয় কার্যালয় ও তার আশপাশে।

খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে পুলিশ মোতায়েন ও শীর্ষ নেতাদের কারাবন্দির প্রতিবাদ – নিন্দার ঝড় : বিএনপি’র শীর্ষ স্থানীয় ৫ নেতার গ্রেফতার, অপর শীর্ষ নেতাদের বাসা-বাড়ীতে তল্লাশী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কার্যালয় ও বাসার সামনে পুলিশ মোতায়েনের ঘটনা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ও ১৮ দলীয় জোটের শরিকরা। একই সাথে ৮৪ ঘণ্টা হরতাল সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, ডেমোক্রেটিক লীগ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন। এছাড়াও প্রবাস থেকে বিবৃতিতে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ এমপি বিবৃতিতে বলেন, পতন ঠেকাতে সরকার মরণ কামড় দিচ্ছে। কিন্তু জনতা রাস্তায় নেমে এসেছে তাই সরকারের পরিণতি হবে খুবই করুন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ