খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করেছে সরকার

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, `বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার নামে তাকে মূলত নিরাপত্তাহীন করে রাখা হয়েছে। বাসার পানির সাপ্লাই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে কোনো প্রকার খাবার সরবরাহও করতে দিচ্ছে না সরকার।’ এটি কোন ধরনের গণতন্ত্র, সরকারের কাছে  তিনি জানতে চান।

রোববার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৮৪ ঘণ্টার টানা হরতালের প্রথম দিন শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘সরকার মুমূর্ষু গণতন্ত্রকে কফিনে ঢুকিয়ে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন করে দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতাকে মানসিকভাবে দুর্বল, চাপ সৃষ্টি এবং তাকে আতঙ্কগ্রস্ত করার জন্যই সরকার এসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। দেশ যখন একটি রাজনৈতিক সমাধানের জন্য উন্মুখ তখন ক্ষমতাশীনরা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের গোপন ইচ্ছা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। এজন্য বিরোধী দলের উপর ‘ক্রাকডাউন’ (কঠোর ব্যবস্থা) শুরু করেছে। সরকার অদ্ভুত আচরণ করছে মন্তব্য করে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তারা কি চায়, তাদের কি উদ্দেশ্য?’

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্রের সংজ্ঞার সঙ্গে এই সরকারের গণতন্ত্র মেলে না। তাদের গণতন্ত্র মানে আওয়ামী লীগীয় গণতন্ত্র। সেখানে বিরোধী দল বা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার বলে কিছু নেই।’

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছিল সর্বজন স্বীকৃত এবং প্রতিষ্ঠিত নির্বাচনী ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে, সরকার সেটা বাতিল করে দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি অবিলম্বে সংবিধানে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা পুনঃসংযোজনের দাবি জানান।

রিজভী বলেন, ‘বিরোধী দলের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে সরকার তার স্বৈরাচারী স্বভাব, বৈশিষ্ট্য উন্মোচন করেছে।’ ১৮ দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি অব্যাহত আছে-অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তল্লাশির সময় বাসায় থাকা শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা দুর্ব্যবহার করছে।’

রুহুল কবীর রিজভী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিয়াস করিমের বাসা এবং দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিনের বাসায় পুলিশি তল্লাশির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। হরতালের প্রথম দিনে সারাদেশে সাত শতাধিক গ্রেফতার, ১৮শ’ আহত, মামলার আসামি আট হাজার, ভ্রাম্যমাণ আদালত চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে বলে দাবি করেন রিজভী। তিনি আটক নেতাদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহরের দাবি জানান।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ