আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর
হাবিব উল্যা জহির, এবিসি নিউজ বিডি, লক্ষ্মীপুরঃ আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর। ১৯৭০ সালের এই দিনে লক্ষ্মীপুরসহ উপকূলীয় জেলা গুলোতে মহপ্রলয়ংঙ্কারী ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আঘাতহানে।
এর আঘাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরের চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ৮ থেকে ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। স্রোতে ভেসে যায় নারী শিশু ও বৃদ্ধসহ হাজার হাজার তাজা প্রাণ।
এদিনে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা হচ্ছে রামগতি উপজেলার চর আবদুল্লাহ ইউনিয়ন। জেলেপল্লী অধ্যুষিত এ ইউনিটি ছিল প্রায় নারী-শিশু শূন্য। চর আবদুল্লাহ’র বাসিন্দা ইয়াসিন ভূঁঞা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের সহকারী সচিব গভর্ণর হাউজে চাকুরী করত। তার বাবা-দাদীসহ বাড়ির প্রায় সবাই ভেসে গেছেন পানির তোড়ে। হাজী আলী হোসেনের ষোড়শী মেয়ে ঢেউয়ের টানে ভেসে যায়। সেই রাতে সিএসপি আব্দুর রব চৌধুরীর চর কোলা কোপা গ্রামের ১১৩ জন আত্মীয়-স্বজনকে জলোচ্ছ্বাসে ভেসে নেয়। সে দিনের হাজারো নির্মম ঘটনার স্বাক্ষি দেশের দক্ষিণ উপকূল।
এই দিনটি ফিরে এলে সেইদিন বেঁচে যাওয়া মানুষগুলো এখনও ভয়ে আতকে উঠে। ৪৩ বছর পরেও প্রিয়জন হারানো মানুষরা ভয়াল এ দিনটিকে ভুলতে পারেনি।
স্বজনহারারা জানান, সে দিন রেডিওতে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত দেয়া হয়। কিন্তূ উপকূলে পর্যাপ্ত রেডিও ছিল না । যাদের ছিল তারা বিশ্বাস করেনি।ওই দিন সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ছিল। সন্ধ্যায় হালকা বাতাস হয়। গভীর রাতে ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আঘাতহানে। যার গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ২২২ কিলোমিটার। ঝড় আর পাহাড়সম স্রোতে উপকূল লন্ড ভন্ড হয়ে যায়। চারদিকে লাশ আর লাশ ভাসতে থাকে। পানি সরতে সরতে লাশ পচন ধরে। ওই পরিস্থিতিতে অসংখ্য লাশ দাফন করা সম্ভব হয়নি। শিয়াল কুকুর টেনে হিচড়ে খেয়েছে। সে রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
প্রতি বছর এ দিনে বেসরকারী সংস্থা র্ডপ সহ কিছু সংগঠন নিহতদের জন্য দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও কোরআনখানি ও আলোচনার মধ্য দিয়ে তাদের স্বরণ করে। কিন্তু এত বড় একটি ঘটনা রাষ্ট্রিয় ভাবে স্মরণ করা হয় না। এ জন্য ১৯৭০ এর ১২ নভেম্বরের প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছাসের ফলে ১০ লাখ লোকের প্রাণহানীর ঘটানাকে চির স্মরনীয় করে রাখতে ১২ নভেম্বরকে ‘জাতীয় দূর্যোগ দিবস’ ঘোষনা করার দাবি জানিয়ে আসছে বেসরকারী সংস্থা র্ডপ। এটি ঘোষনা করা হলে যে শুধু তাদেরকে স্মরণ করা হবে তাই নয়, দিবসটি উদযাপন করতে গিয়ে সকলের মধ্যে দূর্যোগ প্রতিরোধে সচেতনতাও সৃষ্টি হবে।
প্রতি বছর এ দিনে বেসরকারী সংস্থা র্ডপ সহ কিছু সংগঠন নিহতদের জন্য দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও কোরআনখানি ও আলোচনার মধ্য দিয়ে তাদের স্বরণ করে। কিন্তু এত বড় একটি ঘটনা রাষ্ট্রিয় ভাবে স্মরণ করা হয় না। এ জন্য ১৯৭০ এর ১২ নভেম্বরের প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছাসের ফলে ১০ লাখ লোকের প্রাণহানীর ঘটানাকে চির স্মরনীয় করে রাখতে ১২ নভেম্বরকে ‘জাতীয় দূর্যোগ দিবস’ ঘোষনা করার দাবি জানিয়ে আসছে বেসরকারী সংস্থা র্ডপ। এটি ঘোষনা করা হলে যে শুধু তাদেরকে স্মরণ করা হবে তাই নয়, দিবসটি উদযাপন করতে গিয়ে সকলের মধ্যে দূর্যোগ প্রতিরোধে সচেতনতাও সৃষ্টি হবে।