প্রধানমন্ত্রীর উচিত রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর উচিত রাষ্ট্রপতির কাছে তার ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু তিনি তা করেননি।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত ‘গণমাধ্যমে হামলা ও বিরাজমান পরিস্থিতিতে’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজ) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘মন্ত্রীরা পদত্যাগপত্র দিলে তাদের পদ শূন্য হয়, কিন্তু তারা কীভাবে এখনো দায়িত্ব পালন করছেন তা আমি বুঝতে পারছি না।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি পদত্যাগ করুন। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।না হলে সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য গণআদালতে আপনার বিচার হবে।’
মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করার মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে বলেছেন আমি সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বো না। কিন্তু সংসদ অধিবেশনের মেয়াদ বার বার বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে তিনি সংবিধানকে বার বার লঙ্ঘন করছেন। কেবিনেট ভাঙার পর প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করার এক দৃষ্টতা দেখিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূলত দ্বিমুখী আচরণ করছেন। তিনি একদিকে বলছেন, প্রধানমন্ত্রীত্ব নয়, তিনি শান্তি চান। অন্যদিকে রাজপথে মানুষ হত্যাসহ অশান্তি তিনিই ছড়িয়ে দিচ্ছেন।’
লিখিত বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘সরকারের পাঁচ বছরের শাসনামলে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ ১৯ জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। হামলা–মামলা-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন অনেক সাংবাদিক। দেশের গণমাধ্যম বর্তমানে কঠিন সময় পার করছে। এ সরকারের পুরো মেয়াদে নানা স্টাইলে মিডিয়া দলন চলছে। সরকার ভিন্নমত ও সমালোচনা একেবারেই সহ্য করতে পারছে না। সরকারের দুর্নীতি ও স্বৈরনীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেই সেইসব মিডিয়ার ওপর খড়্গ নেমে আসছে। বন্ধ করা হচ্ছে সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল।’
এ সময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, ‘সরকারের সমর্থিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করছে ৭০ শতাংশ মানুষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়।’
আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন চায় অভিয়োগ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি অংশগ্রহণ করলে তারা বিজয়ী হবে না। তাই তারা একদলীয় নির্বাচনের উদ্যাগ নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কখনও একদলীয় শাসন মেনে নেবে না। বর্তমানে সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে সংকট নিরসন করা সম্ভব।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ, দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি আব্দুল হাই শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ।