কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছে সরকার

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, একদলীয় প্রহসনের নির্বাচনের সব আয়োজন সরকার সম্পন্ন করেছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার কফিনের শেষ পেরেকটা সরকারই ঠুকেছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গৃহপালিত নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর হুকুম তামিলে ব্যস্ত। প্রধানমন্ত্রী রোববার বিরোধী দলীয় নেতাকে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। শাপলা চত্বরে মধ্যরাতে বাতি নিভিয়ে দিয়ে গণহত্যার যে জঘন্য নজির স্থাপন করা হয়েছে, তা কেবল প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশে হয়েছে। এটা সভ্য দুনিয়ার ইতিহাসে নজিরবিহীন।

দলের মুখপাত্র  অভিযোগ করেন, রোববার সন্ধ্যা থেকে আজ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। আহত ৫৮৭ জন, গুলিবিদ্ধ ১৪৬ জন, গ্রেফতার   ২৯১ জন, মামলা হয়েছে ২৫০০ জন এবং  ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা হয়েছে ২ জনের।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস রক্ষী বাহিনীর বর্বরোতম গণহত্যার ইতিহাস। বাসে গান পাউডার দিয়ে শাহবাগে মানুষ পুড়িয়ে মারার ইতিহাস। এদেশের মানুষ লগি-বৈঠার তাণ্ডবের কথা এখনো ভুলে যায়নি। চলমান গণআন্দোলনকে কুলষিত করার কু-মানসে আওয়ামী লীগ সুপরিকল্পিতভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘৃন্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। আমরা এহেন কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে যুগ্ম মহাসচিব বলেন,  দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা আজ গণরোষের শিকার হচ্ছেন। কেউ কেউ নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ পাহারায় প্রবেশ করতেও ভয় পাচ্ছে। তারপরেও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার দুঃস্বপ্ন দেখছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী  প্রায়ই সংবিধানের দোহাই দিয়ে থাকেন। তিনি সেই সংবিধানের কথা বলছেন যে সংবিধান তাকে প্রধানমন্ত্রীত্ব চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিয়েছে। তার মরহুম পিতাও বাকশালী সংবিধানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির পদ অনির্দিষ্টকালের জন্য ইজারা নিয়েছিলেন। যে পঞ্চদশ সংশোধনী সংসদে পাশ হয়েছে, তা কেবল প্রধানমন্ত্রীর একক ইচ্ছার প্রতিফলন। সেখানে জনগণের অভিপ্রায়ের প্রতিফলন হয়নি। সংবিধান পঞ্চদশ সংশোধনে গঠিত সংসদীয় বিশেষ কমিটির সকল সদস্যই সর্বসম্মতিক্রমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান বহাল রাখার পক্ষে সুপারিশ করেছিল।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান হোক,  সেটাই চাই। যার জন্য আওয়ামী লীগই ১৭৩ দিন হরতাল-অবরোধ পালন করেছিল। ওই সময়ে বহুমূল্যবান জান-মাল ধ্বংস করেছে তারা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ চায়। অন্যথায় গণআন্দোলনের মুখে স্বৈরশাসনের পতন হতে বাধ্য। আমরা এখনো আশা করি, গণদাবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে পদত্যাগ করবেন। নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেবেন।

যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার ইতিমধ্যে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে না নেওয়ায় ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল স্থগিত না করায় জনতার দাবি অনুযায়ী চলমান শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি আগামী ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। সংগ্রামী দেশবাসীকে কষ্ট স্বীকার করে হলেও দেশ, জাতি ও গণতন্ত্র রক্ষাসর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করার জন্য ১৮ দলীয় জোট নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আমি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।

বেসরকারি টেলিভিশন-আরটিভি’র রিপোর্টার তানজিদ রনি এবং ক্যামেরাপারসন প্রশান্ত মোদককে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় জড়িত করে পুলিশি রিমান্ডে নেওয়ার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৮ দলের শান্তিপূর্ণ অবরোধের ছবি তোলার মতো পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে সরকারের পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতে দুই সাংবাদিক নির্যাতিত হয়েছেন। প্রতিদিনই এই ঘটনা ঘটছে। বর্তমান সরকারের হাতে সাংবাদিক নির্যাতনের এই ঘটনা নতুন নয়। আমরা এহেন ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ