রাষ্ট্রপতিকে সার্বিক পরিস্থিতি জানালেন প্রধানমন্ত্রী
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরণে জাতিসংঘ দূতের সমঝোতার চেষ্টার মধ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে দেখা করে সার্বিক পরিস্থিতি তাকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে কী কী বিষয় ছিল- সে বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছু জানাননি রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব ইহসানুল করিম।
সার্বিক পরিস্থিতি বলতে কী বোঝায়- তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেটা আমার এখতিয়ারের বাইরে। আপনারা নিজেরা বুঝে নেন।”
নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক মতভেদে সংঘাত-সহিংসতা এবং সমঝোতার তৎপরতার মধ্যে রোববার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যান সরকার প্রধান।
তাদের মধ্যে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা আলোচনা হয়। ওই সময় বঙ্গভবনে ঢুকতে দেখা যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকেও।
দুপুরে এই সাক্ষাতের কর্মসূচি জানানোর পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “এটি একটি রুটিন ওয়ার্ক।
“জাতিসংঘের দূতের সফর, জাতীয় পার্টির মন্ত্রীদের পদত্যাগ, রাষ্ট্রপতির দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।”
ইহসানুল করিম জানান, বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার শেষকৃত্যে অংশ নিতে সোমবার বিকালে কেপ টাউনের উদ্দেশে রওনা হবেন রাষ্ট্রপতি। এই সফরের বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে আসা আবদুল হামিদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবরও নেন বলে প্রেসসচিব জানান।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছিলেন শেখ হাসিনা। ওই দিন নির্বাচনকালীন ‘সর্বদলীয়’ সরকার গঠনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে জানান তিনি। পরদিন নির্বাচনকালীন সরকারে শপথ নেন নতুন চার মন্ত্রী ও দুই প্রতিমন্ত্রী।
এই নির্বাচনকালীন সরকারের বিরোধিতা করে আসা বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। তাদের দাবি, নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখেই ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৫ জানুয়ারি ভোট করবে তারা।
জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিলেও ৩ ডিসেম্বর আকস্মিক ঘোষণায় ভোটে না যাওয়ার কথা জানান দলীয় প্রধান এইচ এম এরশাদ।
প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা জাতীয় পার্টির মন্ত্রীদের পদত্যাগেরও নির্দেশ দেন তিনি।
এই পরিস্থিতে রাজনৈতিক সহিংসতায় গত তিন সপ্তাহে অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য কার্যত অচল হয়ে পড়ায় সমঝোতার দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন ব্যবসায়ীরাও।
এদিকে এই রাজনৈতিক সঙ্কট অবসানের লক্ষ্য নিয়ে শুক্রবার ঢাকা পৌঁছেছেন জাতিসংঘ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকো।
শনিবার তিনি শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।