ছয় জল্লাদ প্রস্তুত

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করতে ৬জন জল্লাদ রেডি আছেন।

কারা কর্তৃপক্ষ এই ছয় জল্লাদের নামও চূড়ান্ত করেছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী শাহজাহান ভূইয়া হচ্ছেন এই ছয়জনের মধ্যে প্রধান। তার সহকারী পাঁচজনও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।

শাহজাহান দুটি খুনের মামলায় ৬০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পাঁচ কয়েদি বজলুল হুদা, মুহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি) সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহারিয়ার রশীদ খান ও এ কে এম মহিউদ্দিনের (ল্যান্সার) ফাঁসির রায় কার্যকরে প্রধান জল্লাদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই শাহজাহান।

এ ছাড়া আলোচিত শারমিন রিমা হত্যা মামলার আসামি মনিরকে ফাঁসি দেওয়া জল্লাদ হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। কুখ্যাত খুনি খুলনার এরশাদ সিকদারের ফাঁসি কার্যকর করতে শাহজাহানকে ওই সময় কাশিমপুর কারাগার থেকে খুলনায় নেওয়া হয়েছিল। ২০০৭ সালের মার্চে কাশিমপুর কারাগারে জঙ্গী মামুনের ফাঁসির সময় জল্লাদের দায়িত্ব পালন করেন এই শাহজাহান।

ওই সময় সহ জল্লাদের দায়িত্বে থাকা কালু মিয়াও জল্লাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি কালু ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার কয়েদিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের সময়ও তিনি সহ জল্লাদের দায়িত্ব পালন করেন। কালু সাভারের জোড়া খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি। তার বাসা রাজধানীর মোহাম্মদপুরে। তিনি এখন পর্যন্ত ১৩টি ফাঁসির রায় কার্যকর করেছেন।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করার সময় চারজন জল্লাদকে শাহজাহানের সহযোগী হিসেবে মঞ্চের পাশে ডাকা হবে।

ফাঁসির মঞ্চের পাশে অনেকের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকবেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক। তার হাতে থাকবে একটি লাল রুমাল। হাত থেকে রুমালটি মাটিতে পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জল্লাদ মঞ্চের লিভার (লোহার তৈরি বিশেষ হাতল) টেনে দেবেন, এতে পায়ের তলা থেকে কাঠ সরে ফাঁসি কার্যকর হবে। এরপর লাশটি আধা ঘণ্টা ধরে গলায় রশি দেওয়া অবস্থায় কুয়ার ওপর ঝুলতে থাকবে।

প্রস্তুত মঞ্চ : জালানো হয়েছে বিশেষ লাইট

এদিকে কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝোলানোর জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দুদিন আগেই ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। কারাগারের দুটি ফাঁসির মঞ্চের একটিকে এ জন্য ধুয়ে মুছে তৈরি করা হয়েছে। ফাঁসির দড়িও ঠিক করে রেখেছে কারা কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাতে ফাঁসির মঞ্চে জ্বালানো হয়েছে বিশেষ আলো। এরই মধ্যে কারাগারের অভ্যন্তরে ফাঁসির মহড়াও দেয়া শেষ।

কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে দড়িতে কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে, সে দড়িতে কাদের মোল্লার ওজনের সমপরিমাণ ইটসহ বস্তা বেধে এ মহড়া দেয়া হয়। যাতে কাদের মোল্লাকে ঝোলানোর পরে সে দড়িতে কোনো ধরণের  সমস্যা তৈরি না হয়। ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ মঞ্চ পরিদর্শন করেছেন বলেও জানা গেছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ