রিভিউ’র শুনানি চলছে
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশের বিষয়ে রিভিউ আবেদন হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে শুনানি শুরু হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে আসামিপক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক এ আবেদন উপস্থাপন করেছেন। রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম।
প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে শুনানি শেষে ফাঁসির স্থগিতাদেশের বিষয়ে আদেশ না দিয়ে আপিল আদালত বলেন, সরকার এ বিষযে কোনো পদক্ষেপ নিবেন না যেহেতু মামলাটি আপিল বিভাগে পেন্ডিং রয়েছে।
আজ বুধবার আদালতে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানোর সঙ্গে রিভিউ করতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে নির্দেশনা চাওয়া হয়। আদালতের শুনানিতে ছিলেন আসামিপক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম।
শুনানির সময় আদালতের ভিতরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের মিলিয়ে চার শতাধিক ও বাইরে কয়েকশ’ আইনজীবী অবস্থান করছেন।
এ আবেদন শুনানির জন্য আলাদা একটি (সাপ্লিমেন্টারি কজলিস্ট) সম্পূরক কার্য্য তালিকা তৈরি করেন আপিল আদালত।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যাদেশ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত স্থগিত রাখতে অন্তবর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে এ ফাঁসি কার্যকর করার কথা ছিল। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে কাদের মোল্লার আইনজীবীরা আদেশের কপি নিয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন।
এরপর সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী সাংবাদিকদের জানান, রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়েছে। আজ কাদের মোল্লার ফাঁসি হবে না।
রাত সোয়া ১০টায় চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন কাকরাইলের জাজেস কমপ্লেক্সের নিজ বাসভবন থেকে রায়ের কার্যকারিতা স্থগিতের আদেশ দেন। বুধবার সকালে আদালতে বিষয়টির শুনানি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন সর্বোচ্চ আদালত।
আদেশ পেয়েই কাদের মোল্লার আইনজীবীরা ছুটে যান সুপ্রিম কোর্টের রেজিষ্ট্রারের কাছে। সেখান থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্থগিতাদেশটি নিয়ে তারা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্য রওনা হন।
জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি ঠেকাতে রিভিউ আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বাসভবনে জরুরি শুনানি করেন তার আইনজীবীরা। আদেশ পাওয়ার পর ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, এ আদেশের পরও কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হলে তা হবে আদালত অবমাননা।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আবেদনটি নিয়ে তারা চেম্বার বিচারপতির বাসভবনে উপস্থিত হলে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে আবেদনের কপি সরবরাহ করা হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হয়। বিচারপতির পরামর্শে আবেদনের একটি কপি অ্যাটর্নি জেনারেলকে পৌঁছে দিতে যান খন্দকার মাহবুব ও তাজুল ইসলাম।
তারা এটার্নি জেনারেলকে বাসভবনে না পেয়ে আবেদনের কপি তার হাতে পৌঁছানোর জন্য বাসভবনে দিয়ে আসেন বলে চেম্বার বিচারপতিকে জানান আইনজীবীরা। এপর্যায়ে আবেদনের যৌক্তিকতা ও আইনি বিষয়াদি প্রকাশ্য আদালতে শুনানির জন্য সকাল ১০টায় সময় নির্ধারণ করা হয়। এ শুনানির স্বার্থে কাদের মোল্লার ফাঁসি সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত স্থগিত রাখতে আদেশ দেওয়া হয়।
এর আগে সন্ধ্যার দিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।
শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক ও তাজুল ইসলাম। এবং জাজেজ কপ্লেক্সের সামনে ছিলেন প্রায় ১৫ জনের মতো আইনজীবী ও বিভিন্ন মেডিয়ার সাংবাদিকরা।
আবেদন শুনানির আগে সরকারের প্রধান আইনজীবী অ্যার্টনি জেনারেলর মাহাবুবে আলমের খোঁজে ডিফেন্সের আইনজীবী টিম গিয়ে তাকে বাসায় পাননি বলে জানা গেছে। তারা বলছেন অ্যার্টনি জেনারেলকে বাসায় খোঁজে পাননি। তাই তারা অ্যার্টনি জেনারেলের কাছে আবেদনের কপি না দিয়ে তাকে পৌঁছাতে বাসায় রেখে এসেছেন।