বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ চারদিকে উত্তেজনা। মানুষ উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি দেখে মনে হয় বাংলাদেশে ছোট আকারে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনলাইন আল জাজিরার এক খবরে একথা বলা হয়েছে। গতকাল আবদুল কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এর অর্থ হলো- স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত নৃশংসতার অভিযোগে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে যাচ্ছে কাদের মোল্লার। তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, তার মক্কেলকে ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে ফাঁসি দেওয়া হতে পারে। তবে কাদের মোল্লা ও তার আত্মীয়রা প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারেন।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, তার মক্কেল সুবিচার পান নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেহেতু সর্বোচ্চ আদালত থেকে এ রায় দেওয়া হয়েছে এখন তাদের আর কিছু বলার নেই। কাদের মোল্লার এ মামলা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কয়েক মাস ধরে চলছে উত্তেজনা। এখন জাতীয় নির্বাচন একেবারে সন্নিকটে। এ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে তারা বিরোধী দল বিএনপির আন্দোলনে মূল ভূমিকা রাখছে। ঢাকা থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি খবর দিয়েছেন, কাদের মোল্লার রিভিউ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিচারকদের গ্রামের বাড়িতে হামলা হয়েছে। মানুষ উদ্বিগ্ন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কাদের মোল্লাকে প্রথমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপরই সরকার আইন পরিবর্তন করে আপিলের সুযোগ নেয়। তাদের আপিলের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট কাদের মোল্লাকে শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দেয়। সে অনুযায়ী গত মঙ্গলবার ঢাকার স্থানীয় সময় রাত ১২টা ১ মিনিটে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আদালত পিটিশন বিবেচনার জন্য ওই ফাঁসি শেষ মুহূর্তে স্থগিত করেন। এরপর কাদের মোল্লার পিটিশনের শুনানিতে গতকাল প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে ৫ বিচারকের প্যানেল তার পিটিশন খারিজ করে দেন।
২০১০ সালে স্থাপিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর বিরোধীদলীয় ৫ নেতার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে। তাদের একজন কাদের মোল্লা। এ আদালতের সমালোচকেরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আদালতকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। শেখ হাসিনার সঙ্গে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরোধ দীর্ঘদিনের। বলা হচ্ছে, আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিরোধী দলকে দুর্বল করে দেওয়ার একটি পন্থা এ বিচার। তবে অনেক বাংলাদেশীই এ আদালতকে সমর্থন করেন। তারা বিশ্বাস করেন, যারা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে তাদের শাস্তি হতে হবে। এ নিয়ে ১৬ কোটি মানুষের এ দেশটি বিভক্ত হয়ে পড়েছে।