এরশাদ আটক, হাওলাদার নিখোঁজ

Ershad howlader এরশাদ হাওলাদারসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নির্বাচনের মাঠ থেকে সড়ে যাওয়ায় ‘আটক’ হন জাতীয় পার্টির(জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার অনুপস্থিতিতে নির্বাচনে বহাল থাকার কথা জানান রওশন এরশাদ নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির একাংশ। আবার রওশনের বক্তব্যকে অস্বীকার করে বিবৃতি দেন এরশাদের মুখপাত্র। এদিকে ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। এ পরিস্থিতিতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে জাতীয় পার্টির(জাপা) নেতাকর্মীরা।

জাতীয় পার্টির নেতারা জানান, ‘আটক’ হওয়ার পরও নির্বাচনে না যেতে অনড় রয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ। অন্যদিকে সরকারপন্থী একটি অংশ নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে। গুঞ্জন উঠেছে রওশনকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আবার রওশনের দায়িত্ব প্রাপ্তির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। এ নিয়ে চরম হতাশ নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা রয়েছেন দোটানায়। দেখা দিচ্ছে বিভ্রান্তি। জন্ম নিচ্ছে নানা প্রশ্ন- শেষ পর্যন্ত কী করবে জাতীয় পার্টি? কোন দিকে যাচ্ছে তাদের দল? কার কাছে দলের দায়িত্ব? কে জাতীয় পার্টির অভিভাবক?

জাতীয় পার্টি সূত্রে জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ের শেষ দিনেও (শুক্রবার) জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন বাবলু, মুজিবুল হক চুন্নুসহ প্রায় অর্ধশতাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি।

নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে গত দুদিন ধরে রওশন এরশাদের বাসায় দফায় দফায় বৈঠকে হয়। শনিবার জিয়া উদ্দিন বাবলু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, তাজুল ইসলাম ইসলাম চৌধুরী ও মুজিবুল হক চুন্নু রওশন এরশাদের বাসায় দীর্ঘ বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তারা নির্বাচনে যাবেন। তারা লাঙল প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে যাবেন।

তবে জাপার আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, নির্বাচনে যাব কি যাব না এ বিষয়ে এখানো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।

এদিকে, এরশাদের বরাত দিয়ে তার বিশেষ উপদেষ্টা ববি হাজ্জাজ বলেছেন, আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যাবে না। এরশাদ বহাল তবিয়তে আছেন।

শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। এরশাদের সঙ্গে সব সময় তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

ববি হাজ্জাজ বলেন, এরশাদ ও জাতীয় পার্টি নির্বাচন করবে না। আপাতত কেউ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হবেন না। পার্টি ও পার্টির চেয়ারম্যানের মুখপাত্রের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে। দলের অন্য কারও বক্তব্য চেয়ারম্যানের ভাষ্য হবে না।

এরশাদের বরাত দিয়ে হাজ্জাজ বলেন, জাপা চায় গণতান্ত্রিক সরকার। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে গণতান্ত্রিক সরকার আসবে না। তাই নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এরশাদ।

তিনি দেশবাসীকে জানিয়েছেন, সরকার পার্টির নেতাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেনি। এর অর্থ এ নয় যে, আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। এটি পরিস্কার এরশাদ নির্বাচনে নেই। কাজেই জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে নেই।

তিনি বলেন, শুক্রবার আওয়ামী লীগের দুই নেতা এরশাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে, তা সঠিক নয়। এরশাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো নেতার সম্প্রতি দেখা হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে হতাশা প্রকাশ করে জাপা নেতারা জানান, সারাদিন মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কারও সাথে তার যোগাযোগ নেই। তাকে কোথাও ‘খুঁজে’ পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা কোনো সঠিক দিক নির্দেশনা পাচ্ছি না।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ