আবাসন কেলেঙ্কারিতে ফাঁসলেন দেবযানী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ এবার নিজ দেশেই আরেক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গেলন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় কনস্যুলেটের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানী খোবরাগাড়ে। মহারাষ্ট্রে আদর্শ আবাসন-কেলেঙ্কারিতে দেবযানীর জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে এখন ভারতেই তোলপাড় শুরু হয়েছে।
শুক্রবার মহারাষ্ট্র বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে পেশ করা হয় আদর্শ আবাসন কেলেঙ্কারির তদন্ত রিপোর্ট৷
রিপোর্টে দেখা যায়, মহারাষ্ট্রে আদর্শ আবাসন প্রকল্পে যে ২৫ জন বেআইনিভাবে প্লট পেয়েছিলেন তার মধ্যে রয়েছেন দেবযানীও৷ এছাড়াও মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চৌহানের তিন আত্মীয় এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডের ঘনিষ্ঠদের মধ্যেই বেআইনিভাবে ফ্ল্যাট বিতরণ করা হয়েছিল৷ যদিও মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভা এই রিপোর্ট খারিজ করে দিয়েছে৷
২০১১ সালে মুম্বাই হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জে ও পাতিলের নেতৃত্বে আদর্শ আবাসন কেলেঙ্কারির তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়৷ চলতি বছরেই রাজ্য সরকার হাই কোর্টে প্রতিশ্রূতি দেয়, বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশেনের মধ্যেই এই রিপোর্ট প্রদান করা হবে৷ তবে শুক্রবার তা পেশ করা হলে মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভা তা খারজি করে দেয়৷
জানা যায়, মহারাষ্ট্র সরকার কোনওভাবেই মানতে রাজি নয়, রাজনৈতিক নেতাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকেই অবৈধভাবে ফ্ল্যাট বিতরণ করা হয়েছিল৷ এদিন টুইটারে রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি৷
তিনি বলেন, ‘এর আগে সংসদের যৌথ কমিটি টুজি-কেলেঙ্কারির ধাপাচাপা দিয়েছিল৷ আর এবার মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভা আদর্শ কেলেঙ্কারি ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু এভাবে কি সত্যকে চাপা দেয়া যাবে?’
উল্লেখ্য, গৃহকর্মীর ভিসা আবেদনে মজুরি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেয়া এবং তাকে চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক না দিয়ে বেশি কাজ করানোর অভিযোগে গত সপ্তাহে দেবযানীকে নিউইয়র্ক পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে থানায় নিয়ে বিবস্ত্র করে তল্লাশি এবং মাদক চোরাচালানী ও যৌনকর্মীদের সঙ্গে একই কক্ষে রাখা নিয়ে ভারতজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দেখা দেয় কূটনৈতিক টানাপোড়েন।
সর্বশেষ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি ফোন করে পুরো বিষয়টির জন্য কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেও ভারত সন্তুস্ট হতে পারেনি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সালমান খুরশিদ এরজন্য যুক্তরাষ্ট্রকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানালেও মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। একইসঙ্গে দেবযানীর বিরুদ্ধে আরোপিত অভিযোগও কোনোভাবেই প্রত্যাহার করা হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন।