কুতুপালং শিবিরে রোহিঙ্গা জঙ্গীর অনুপ্রবেশঃ গ্রেপ্তার আতংক !

rohingya

কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের হ্নীলার দারুচ্ছুন্নাহ মাদ্রাসায় জামায়াত নেতা ও রোহিঙ্গা জঙ্গী ক্যাডারদের নিয়ে গোপন বৈঠক করার সময় আর্ন্তজাতিক সন্ত্রাসী গ্র“পের ও আরকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের সামরিক উপদেষ্টা এবং জামায়াত শিবিরের অর্থ যোগনদাতা হাফেজ ছলাউল ইসলাম পুলিশের হাতে আটক হওয়ায় উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে অবস্থানকারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শতাধিক রোহিঙ্গা জঙ্গীরা গ্রেপ্তার আতংকে ভোগছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ওই ক্যাম্পটির চারপাশে ঘেরা-বেড়া না থাকায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে দীর্ঘদিন ধরে। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে জঙ্গীদের নিয়ে প্রতিনিয়ত বৈঠক, পরামর্শমূলক আলোচনা হলেও ক্যাম্প পুলিশ এসব তথ্য জানার গরজ মনে করছে না। যার ফলে ক্যাম্পের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের লোকজন যাতায়াত করে নানা রকম অপকর্ম করে যাচ্ছে। ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপারে অভিযোগ পেলেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের রেজিষ্ট্রার্ড ১০ হাজার ৬শ ৯২ জন রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণ করতে ২শতাধিক রোহিঙ্গা জঙ্গী ক্যাডারদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ক্যাম্প পরিচালনা কমিটি।  এ কমিটির সভাপতি হলেন মৌলভী নুরুল হক, সাধারণ সম্পাদক মৌলভী শফিক। এসব রোহিঙ্গা জঙ্গীরা রেজিষ্ট্রার্ড ও আন-রেজিষ্ট্রার্ড লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের কথামত সাধারণ রোহিঙ্গাদের চলাফেরা করতে হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ক্যাম্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পটি চারপাশে ঘেরা-বেড়া না থাকায় প্রায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। যে যার মত করে ক্যাম্পের ভিতরে যাচ্ছে আর আসছে। ১৪ বছরের রোহিঙ্গা যুবক জয়নাল জানালেন, ক্যাম্পের ভিতরে প্রায় সময় অচেনা লোকজন এসে বৈঠক করে। তবে এদের ব্যাপারে পুলিশ একেবারে নিশ্চুপ থাকে। সূত্র জানায়, পুলিশের হাতে আটক রোহিঙ্গা জঙ্গী নেতা ছালাউল ইসলাম কুতুপালং ক্যাম্পে সম্প্রতি কয়েক দফা বৈঠক করে রোহিঙ্গাদের সাথে পরামর্শ করেছে। গেল কোরবানের ঈদের সময় গরুর মাংস ও রমজানের ঈদের সময় সেমাই, চিনি, তেল, ডাল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও রেজিষ্ট্রার্ড ও আন-রেজিষ্ট্রার্ড রোহিঙ্গাদের স্থানীয় এক প্রভাবশালীর সাবেক জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তুরস্ক এনজিওর ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে। সে সুবাদে স্থানীয় প্রভাবশালী হয়েছে লাখ লাখ টাকার মালিক।

রোহিঙ্গা জঙ্গী নেতা ছালাউল ইসলাম আর্ন্তজাতিক এনজিও সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের সাথে তার সু-সম্পর্ক থাকায় কোটি কোটি টাকা নিয়ে এসেছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের কথা বলে। কক্সবাজার সরকারী কলেজের পেছনে দক্ষিণ মুহুরী পাড়ায় তার অর্থায়ন ও পরিচালনায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ঈমাম মুসলিম (রাঃ) ইসলামি সেন্টার। উক্ত প্রতিষ্ঠানের সভাপতি করা হয়েছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের এক নেতাকে। ওই নেতাও বিপুল পরিমাণ অর্থ রোহিঙ্গা জঙ্গী নেতার কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন। তাই আটক রোহিঙ্গা জঙ্গীকে ছেড়ে নেওয়ার জন্য জোর তদবীর চালাচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবী করেছে। স্থানীয়রা জানান, আওয়ামীলীগ নেতারা যদি রাষ্ট্রদ্রোহী জঙ্গীদের পৃষ্টপোষকতা দিয়ে থাকে তাহলে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাড়াঁবে। যার কারনে এসব জঙ্গীদের আস্পালন বেড়ে গেছে। উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ ইনচার্জ সমীর কুমার বড়–য়া ও লিয়াকত আলী রোহিঙ্গাদের সাথে আতাঁত করায় রোহিঙ্গারা অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে গেলেও তারা দেখেও না দেখার ভান করছে। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে অভিযুক্ত দু’পুলিশ কর্মকর্তার নিকট যোগাযোগ করিলে তারা এসব অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান। জানা গেছে, কুতুপালং ক্যাম্পে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা জঙ্গী ক্যাডার আবু ছিদ্দিক, আবু তাহের, মোঃ রফিক, হাফেজ জালাল, মনিরুজ্জামান, মৌলভী জালাল, মৌলভী হামিদ, মাষ্টার ইকবাল, মৌলভী সাইফুল, আবু তাহের মাঝি, ছৈয়দ আলম, মোঃ আইয়ুব, ছৈয়দ লালু মাঝি, মাষ্টার কবির ও আনোয়ার সহ শতাধিক জঙ্গী গ্রেপ্তার আতংকে ভোগছে। কারণ আটক জঙ্গী নেতা হাফেজ ছালাউল ইসলামের সাথে রয়েছে তাদের গভীর সখ্যতা। উল্লেখ্য ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণের ঘটনায় আন-রেজিষ্ট্রার্ড রোহিঙ্গা মাষ্টার রাকিবের বাবা নজিবুল আলম প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছিল। কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ জালাল উদ্দীনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জঙ্গীদের ব্যাপারে তার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ