যন্ত্রণার নির্বাচন
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিরোধীদলীয় জোট নির্বাচন বর্জন করায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি তেমন হয়নি।তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এ নির্বাচনে ভোট দেওয়া একটি পীড়াদায়ক ব্যাপর হওয়ায় ভোটারেরা ভোটকেন্দ্রে যেতে আগ্রহী হননি।এজন্য ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে।নির্বাচনে সহিংসতার মাত্রা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করাও ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আরও একটি কারণ বলে তারা মনে করেন।তাদের আশঙ্কা,এ নির্বাচন দেশে আরও সহিংসতা বাড়াবে।
বিরোধী দল নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়ায় আজ ভোটগ্রহণের দিন ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।ভোটগ্রহণের দিন আজ এ পর্যন্ত ১২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।ইতোমধ্যে চারশ’র মতো কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়ে গেছে।
নির্বাচনে অনেক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটার প্রায় নেই বললেই চলে। কোনো কেন্দ্রে হাতে গোনা। অনেক কেন্দ্রে প্রার্থীর এজেন্টও নেই।
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ এবার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। কারণ তাদের আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার নিজ এলাকা কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের ভোটার। ওই আসনে তার ছেলে রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক নির্বাচিত হয়েছেন কোনো রকম ভোটের লড়াই ছাড়াই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-১০ আসনের ভোটার। । ২০০৮-এর নির্বাচনে তিনি সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছিলেন। এবার তিনি ভোট দিতে পারবেন না। সেই আসনে শেখ ফজলে নূর তাপস নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ ঢাকা-১১ নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা। সেই আসনে এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের এ কে এম রহমতুল্লাহ।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঢাকা সেনানিবাস এলাকার ভোটার। নির্বাচন বর্জন করায় খালেদা জিয়া ভোট দেবেন না।
এ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও খ্যাতনামা রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, নির্বাচন মানে আনন্দ। কিন্তু আজকের নির্বাচন যন্ত্রণা।এ নির্বাচন জনগণের জন্য ক্ষতিকর। এ নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার হত্যা করা হয়েছে। এর পরিণতি কখনও ভালো হবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড.পিয়াস করিম এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, এ নির্বাচনে সঙ্কট আরও বাড়বে। সহিংসতা আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।