নির্বাচন ৯৭ ভাগ সুষ্ঠু: দাবি ইসি ও আ’লীগের
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিরোধী দল ছাড়াই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৯৭ শতাংশ ভোটকেন্দ্রই সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে বলে করেছে নির্বাচন কমিশন ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে নির্বাচন নিয়ে কিছুটা আক্ষেপও ছিল প্রাধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিনের কন্ঠে।
অন্যদিকে, দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা এ নির্বাচনকে জাতীয় নির্বাচন না বলে উপ-নির্বাচন বলে দাবি করছেন।
এ বিষয়ে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসনের অধ্যাপক কলিমউল্লাহ এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে যে ধরনের আমেজ থাকে, সে ধরনের কোনো আমেজ এ নির্বাচনে ছিল না। সারা দেশের ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতির চিত্র দেখে মনে হয়নি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন জাতীয় নির্বাচন। তবুও বলতে হয় গণতান্ত্রিক নিয়ম বজায় রাখতে এই নির্বাচন।’
নির্বাচন কমিশনের সচিব ড. সাদিক জানান, ১৮ হাজার ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৫৪০টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। শতকরা হিসেবে তা ৩ ভাগ। জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের ব্যবধান স্থগিত কেন্দ্রের ভোটারের চেয়ে বেশি হলে পুনরায় ভোটগ্রহণ হবে না। তবে যেসব আসনে ৫০টির বেশি কেন্দ্র স্থগিত হয়েছে যেসব কেন্দ্রে পুনরায় ভোট করার প্রয়োজন হবে কিনা তা কমিশন বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রমতে, সহিংসতার কবলে পড়েছিল বেশ কিছু কেন্দ্র। খসড়া তালিকার প্রাপ্ত তথ্যানুসারে ৯৭ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।
বেসরকারিভাবে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর রোববার রাত ৩টায় সাংকদিকদের মুখোখমুখি হয়ে হতাশার সুরে জানান, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হলে সুন্দর হতো। আমরাও তাই চেয়েছিলাম। ভেবেওছিলাম প্রধান দুই রাজনৈতিক জোটের মধ্যে দূরত্ব কমে আসবে, সমঝোতা হবে। কিন্তু শেষটায় আর তা হয়নি। তাই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে আমাদের কাজ করতে শেষ হলো। বিরোধী দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ নির্বাচন আয়োজনে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। ক্রটি করেনি।
বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে মেরুদণ্ডহীন বললেও সিটি করপোরেশন আগের বিভিন্ন নির্বাচন করার মাধ্যমে নিরপেক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন বলে দাবি করেন কাজী রকিব, যে নির্বাচনগুলোর অধিকাংশটিতে বিএনপি জয়ী হয়েছে।
উল্লেখ্য, নির্বাচন বর্জনকারী বিরোধী জোটের ভোট প্রতিহতের হুমকির মধ্য দিয়ে রোববার সংঘাত- সহিংসতায় ২১ জন মৃত্যুর মধ্যে ৫৯ জেলার ১৪৭ আসনে ভোটগ্রহণ চলে। কিন্তু গোলযোগের কারণে ভোট স্থগিত হয়েছে ৫৪০টি কেন্দ্রে।
রোবারের নির্বাচনকে কমিশন ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু বললেও নির্বাচনকে প্রহসন অখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে সোমবার থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডাকে।
এমনকি তাদের ভাষায় এই নির্বাচন জনগণ বর্জন করেছে। বিরোধী দলের এই দাবি প্রত্যাখান করে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ও সাবেক সরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেছেন, ‘বিরোধী দল সারা দেশে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তারপরও যে পরিমান ভোটার ভোট দিতে মাঠে নেমেছেন এতে প্রমাণ হয়েছে বিএনপি গণতন্ত্র মানে না। এ সময় সন্তোষ প্রকাশ করে জনগণকে তিনি ধন্যবাদ জানান।