বিএনপি আলোচনায় রাজি
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিএনপি আলোচনা করতে প্রস্তুত আছে তবে তার আগে সরকারকে আলোচনা বসার পরিবেশ তৈরি করতে হবে বলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মন্তব্য করেছেন।
সোমবার রাতে বিবিসির সাথে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, দেখেন প্রথম কথা হলো এটা কোনো ইলেকশন হয়নি। এটাতে কোনো ভোটার টার্ন আউট ছিলো না। ১৫৩টি আসনে প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে গেছে। কোনো পলিটিক্যাল পার্টি নেই। জাতীয় পার্টিকে নিয়ে কি খেলা হয়েছে তা নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন রয়েছে। কাজেই এটাকে ইলেকশন বলা যায় না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্রতিহত করবো কেন? জনগণই প্রতিহত করেছে। জনগণ ভোট কেন্দ্রে যায়নি। এটাই প্রতিহত।
প্রশ্ন : যেকোনো ভাবে একটা নির্বাচন হয়েছে। সরকার বলছে তারা একটা ম্যান্ডেট পেয়েছে।
খালেদা জিয়া : তারা তো ম্যান্ডেট পাননি। জনগণতো তাদের ভোট দেয়নি।
প্রশ্ন : না তারা বলছেন। এখন মানুষের কাছে প্রশ্ন এখন কি হবে?
খালেদা জিয়া : বিএনপি সবসময় শান্তি ও উন্নয়নে বিশ্বাস করে এবং গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকে তাতে বিশ্বাস করে। আমরা তো বারবার বলেছি আলোচনা করো আলোচনা করো। কিন্তু তারা নিজেরাই আলোচনা থেকে সরে গিয়ে একতরফা নির্বাচন করতে চেয়েছে। কারণ তারা ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করে না।বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বহুদলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চায় না। সেই জন্য তারা অনসাইডে সব কিছু করে যাচ্ছে।
আমরা শান্তি চাই, আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাই।
প্রশ্ন : সেটা কিভাবে? যে সরকার আসছে সেই সরকারের সাথে?
খালেদা জিয়া : দেখেন এই সরকারের আগের যে সরকার ছিলো তার মেয়াদ তো ২৪ তারিখ পর্যন্ত। আওয়ামী লীগ তো ধরে নিলো তারা আছে। তো আছেই। যেই থাকুক আলোচনা তো করতেই হবে।
এ সরকার বলে না। আমরা কার সাথে আলোচনা করবো। আমরা তো বাতাসের সাথে আলোচনা করতে পারবো না। জোর করে যারা ক্ষমতায় বসে থাকে তাদের সাথেও আমাদের তো আলোচনা করতে হবে। আলোচনা না করে এর সমাধান নেই। আলোচনা করেই এর সমাধান করতে হবে।
প্রশ্ন : সম্মানিত বিরোধী নেত্রী গতকাল আপনার দলের ভাইস চেয়ারাম্যান তারেক রহমান লন্ডনে একটি প্রেস কন্ফারেন্স করে বলেছেন, এই নির্বাচন একটি অবৈধ নির্বাচন এবং এই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার একটি অবৈধ সরকার। এই সরকারের সাথে কোনো আলোচনা নয় আন্দোলন চলবে। আপনার যে বিবৃতি তাতেও বলা হয়েছে আন্দোলন চলবে।
খালেদা জিয়া : আন্দোলন চলছে চলবে। এখন এই সরকার যদি চায়। আমরা আলোচনায় সব সময় বিশ্বাস করি।কিন্তু সরকারকে সেই আলোচনা করতে হবে পরিবেশ তৈরি করে। আমার নেতাকর্মীরা সব জেলে। সিনিয়র নেতারা জেলে। আমার কয়জন নেতা বাইরে আছে তারা সব পলাতক। কেউ কারোর সাথে আলাপ করতে পারে না দেখা করতে পারে না। আমি হাউজ অ্যারেস্ট গৃহবন্দি। আমি কারো সাথে দেখা করতে পারি না। যোগাযোগ করতে পারি না।আমরা এখন নয় সবসময় আলোচনায় প্রস্তুত।
প্রশ্ন: আলোচনা কিভাবে শুরু হতে পারে। আপনার ফর্মূলাটা কি?
খালেদা জিয়া : আলোচনার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
প্রশ্ন : সেটা কিভাবে হবে।
খালেদা জিয়া : আমার নেতাকর্মীদের সব ছাড়তে হবে। মিথ্যা মামলা সব প্রত্যাহার করতে হবে। যারা হাইয়ারিং আছে তাদেরকে স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে দিতে হবে। আমাদের দুটি অফিস অফিস আছে। অফিসগুলো খুলে দিতে হবে। আমি বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। আমাকে বের হতে হবে।
প্রশ্ন : এটা করতে তো সরকারের সময় লাগবে।
খালেদা জিয়া : এটা করতে কিসের জন্য সময় লাগবে। এটা করতে কিসের জন্য সময় লাগবে। এটা করতে সময় লাগারতো কথা না।
প্রশ্ন : সরকার সব সময় বলছে সহিংসতা…………
খালেদা জিয়া : সহিংসতা কারা করছে। যত মারামারি তা তারাই তো করছে। এর আগেতো তারা সুপ্রিমকোর্টে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করেছে।
প্রশ্ন : অথ্যাৎ কর্মসুচি চলবে?
খালেদা জিয়া : আমাদের কর্মসূচিতো চলছে।
প্রশ্ন : এবং চলবে?
খালেদা জিয়া : এটা নির্ভর করছে সরকারের ওপরে।
প্রশ্ন : আজকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আপনি হয়তবা দেখেছেন।
খালেদা জিয়া : আমি দেখিনি।
প্রশ্ন : ঠিক আছে আমি বলছি। উনি বলেছেন যে আলোচনা করতে জামায়াতকে ছেড়ে আসতে হবে।
খালেদা জিয়া : দেখেন উনি তো জামায়াতের সঙ্গে ছিলেন। জামায়াতকে নিয়ে তিনি ক্ষমতায় গেছেন। তার ডিটেকশনে আমরা চলবো না আমরা ইনডিপেন্ডন্ট পার্টি। কাজেই আমরা আমাদের মতো করে চলবো।
প্রশ্ন : তাহলে আপরি প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি নন?
খালেদা জিয়া : আমি কিসের জন্য প্রতিশ্রুতি দিতে যাবো। কার সাথে প্রতিশ্রুতি দিতে যাবো। আমরা একটা স্বাধীন পার্টি আমরা আমাদেরে মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো কারোর ডিটেকশনে আমরা চলবো না।