খালেদা জিয়া এখন দেশ রক্ষার নেত্রী
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ খালেদা জিয়া এখন আর বিরোধীদলীয় নেতা নন’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি বলেছে, সত্যিই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন অবৈধ সংসদের বিরোধী নেতা নন, তিনি বাংলাদেশ রক্ষার নেত্রী। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার নেত্রী।
শুক্রবার রাতে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
প্রতিবাদ লিপিতে কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এখন আর বিরোধী দলীয় নেতা নন। আমি তাকে বিনয়ের সাথে বলবো, যে সংসদের জন্মই হয়েছে জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও ভোটারবিহীন ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে সে সংসদের সদস্য হওয়া কোনো বিশেষ সম্মান, মর্যাদা ও গৌরবের কিছু নেই।’
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মহল এবং দেশের মানুষ এই কলঙ্কিত নির্বাচনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। দেশে গণতন্ত্রের কবর রচনার মধ্য দিয়ে একদলীয় বাকশাল কায়েম হয়েছে। এতে দেশের পবিত্র সংসদ এবং গণতন্ত্রই শুধু কালিমালিপ্ত হয়নি বরং সরকার এবং নির্বাচন কমিশন জনগণের সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অবশ্যই দেশের মানুষ চরমভাবে রুখে দাঁড়াবে।’
বিবৃতিতে শামীমুর রহমান বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী ও রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ নগ্নভাবে ব্যবহার করে বিরোধীদলীয় নেতাদের গুম, হত্যা, গণগ্রেফতার, জখম, বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে পুড়িয়ে এক বিভীষিকাময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। দেশের ১৬ কোটি মানুষ আজ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের স্বীকার ‘
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার মোহে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। তারা অতীত থেকে কোন শিক্ষা নেয়নি। বাংলাদেশের মানুষ আজ শাসক দলের উপর চরমভাবে ক্ষুদ্ধ। বিভিন্ন বাহিনীর ওপর তো তারা আরও ক্ষুদ্ধ। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ভোট দেওয়ার অধিকার যে দিন তারা ফিরে পাবেন, সেদিন আওয়ামী লীগ বুঝতে পারবে জনগণের মাঝে তাদের অবস্থান কোথায়?’
শামীমুর রহমান শামীম বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাস, অন্যায় ও অত্যাচারের মাত্রা যেখানে ছাড়িয়ে যায়, সেখানে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও সহিংসতা অনিবার্য হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের ভারতের প্রতি নতজানু নীতি, আগ্রাসী রাজনীতি, ক্যাডারদের দৌরাত্ব্য, দলীয়কৃত বিভিন্ন বাহিনী কর্তৃক রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্যাতন ও হত্যা ইত্যাদি চলছে। এ অবস্থায় মানুষ নিস্ক্রিয় হয়ে বসে থাকতে পারে না। কোনো না কোনো পন্থায় প্রতিরোধ করতে তারা বাধ্য হবে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার বাকশালী গণতন্ত্র এদেশের মানুষ চায় না। গণতন্ত্র ও সংবিধানের দোহাই দিয়ে এই বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন ও সরকার যৌথভাবে ২৯০ জন অবৈধ সংসদ সদস্যের জন্ম দিয়েছে। জাতি হিসেবে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের মাথা হেট হয়ে গিয়েছে।’
কৃষিবিদ শামীম আরও বলেন, ‘আমি সৈয়দ আশরাফ সাহেবকে বিনয়ের সাথে বলবো, ক্ষমতায় আছেন বলে জনগণের কথা আপনারা উপলদ্ধি করতে পারছেন না। দেশের প্রকৃত চিত্র আপনারা চোখ দিয়ে দেখতে পারছেন না। এটা দেশের মানুষের জন্য বেদনাদায়ক এবং দুঃখজনক।’
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এদেশের গণমানুষের নেত্রী। এই প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশী জনপ্রিয় ও গণমানুষের ব্যাপক সমর্থন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কিংবা বিরোধীদলীয় নেতা হওয়াটাই বেগম খালেদা জিয়ার কাছে মূখ্য বিষয় নয়। বেগম খালেদা জিয়া এদেশের মানুষের কাছে এখন দেশরক্ষার নেত্রী, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার নেত্রী। তিনি গণমানুষের কল্যাণে রাজনীতি করেন। গণতন্ত্র এবং জাতীয় স্বার্থই তার কাছে সবচেয়ে বড় বিষয়। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে এখন নব্য বাকশালীয় কবল থেকে গণতন্ত্র এবং দেশের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ে জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত।