বাংলাদেশে একদলীয় শাসনের সূচনা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবসিই নিউজ বিডি, ঢাকাঃ খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নতুন সরকারের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে একদলীয় শাসনের সূচনা করছেন বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস।
১১ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘ম্যার্ট্রিয়ার্চেস ডুয়েল ফর পাওয়ার থ্র্যাটেন্স টু টিলট বাংলাদেশ অব ব্যালেন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। অ্যালেন ব্যারি ঢাকা থেকে এ প্রতিবেদনটি লিখেছেন।
এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের সমালোচনা এবং এমনকি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার হুমকিও শেখ হাসিনার কাছে কোনো ব্যাপার নয়। ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম মনে করেন একমাত্র সেনাবাহিনীই সরকারকে সমঝোতায় আসতে বাধ্য করতে পারে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যদি সেনাবাহিনীকে খুশী রাখতে পারেন তবে তার ক্ষমতায় থাকতে কোনো সমস্যা হবে না। খালেদা জিয়া কিছুই করতে পারবেন না, কেবল বাসে আগুন লাগানো ছাড়া। প্রধানমন্ত্রীর একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী গওহর রিজভী নতুন নির্বাচনের ব্যাপারে নিশ্চিত। তবে কখন সে নির্বাচন হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন।
তিনি বলেন, দু’টি বিষয় নিশ্চিত, নির্বাচন হবে এবং বিএনপি অংশ নিবে। তবে ওই নির্বাচনে খালেদা জিয়া থাকতে পারেন, আবার নাও থাকতে পারেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০ বছর ধরে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ ছিল দুই নারী- বেগম খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার হাতে। একগুঁয়ে ও স্বৈরাচারী কিন্তু খুবই জনপ্রিয় এ নেত্রীরা প্রত্যেকে গত চারটি নির্বাচনের দু’টিতে জয়ী হয়েছেন এবং তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে এক ধরণের ভারসাম্য ছিল। তবে গত সপ্তাহে এ সহাবস্থানের সমাপ্তি ঘটেছে। একই সঙ্গে একদলীয় শাসনের ঝুকিপূর্ণ প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। এতে বলা হয়, দীর্ঘস্থায়ী দাঙ্গা-হাঙ্গামার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। একটি বিরল মুসলিম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছিল। দেশটির বিশাল আকাশ, স্থল ও নৌ সীমানা সন্ত্রাসীদের আদর্শ ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হতে পারে। দেশটির ‘বিজয়ীদের সব কিছু ভোগের’ নীতির কারণে দুই নেত্রী জুয়াখেলায় জড়িয়ে পড়েছেন। খালেদা জিয়া নির্বাচন বর্জন করে রাজপথে সহিংস বিক্ষোভের ওপর নির্ভর করে জুয়া খেলেছেন। আর শেখ হাসিনা প্রধান বিরোধী দলকে বাদ দিয়েই নির্বাচন করে জুয়া খেলেছেন। এমনকি আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখেও তিনি নির্বাচন করেছেন।এছাড়া বেশিরভাগ পশ্চিমা সরকার নতুন নির্বাচনের দাবি জানালেও তা তিনি আমলে নিচ্ছেন না। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সরকারের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বাদ দেওয়া উচিত হবে কিনা। তিনি বলেন, ‘তারা বলছেন- এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হবে। কিন্তু আমি বলছি- তিনি থাকলে বাংলাদেশই ঝুঁকিপূর্ণ হবে’।
প্রতিবেদনে বলা হয়,নির্বাচনে বিএনপির জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তত্ত্বাবধায় সরকার ইস্যুতে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে। ফলে রোববারের নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। পশ্চিমা সরকারগুলো এ নির্বাচনের কড়া সমালোচনা করে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা নতুন নির্বাচনের দাবি জানায়।