পাঁচ বছর নিয়ে শঙ্কায় মন্ত্রীরা

Cabinet minister মন্ত্রী শপথসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত যেকোনো সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর এটা সবারই জানা। কিন্তু ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ নিজেদের নির্বাচিত সরকার দাবি করে নিজেরাই বলছেন, এই সরকারের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। তারা এমনটি কেন বলছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

সংবিধান অনুযায়ী শপথগ্রহণের পর থেকে সরকারের মেয়াদ থাকে পাঁচ বছর। যা ঢাক ঢোল পিটিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। শপথ গ্রহণের একদিন যেতে না যেতেই মন্ত্রীরা জোর গলায় ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছেন এই সরকারের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর।

নতুন মন্ত্রীত্ব পাওয়া বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে বর্তমান সরকার যা যা করা দরকার তা করবে।

সংবিধানে সরকারের মেয়াদ স্পষ্ট করে বলা থাকলেও বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীরা কেন প্রচারে নেমেছেন তা নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘মন্ত্রীরা সরকারের মেয়াদ সম্পর্কে গণমাধ্যমে বলাটা দোষের কিছু নয়।’

এর আগে কখনও এরকম বলা হয়নি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা সংবিধান জেনেও যদি মন্ত্রীদের কাছে সরকারের মেয়াদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন তবে তারাতো বলবেনই।’ তবে দেশের কল্যাণে আলোচনার মাধ্যমে চলমান সমস্যার সমাধানে আমরা প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেন এই নেতা।

সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের কাছে মন্ত্রীদের এমন বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে, ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের শপথগ্রহণকে ইতিহাসের কালো অধ্যায় আখ্যা দিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রহসনের নির্বাচন বাদ দিয়ে অনতিবিলম্বে  তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে লাগাতার  আন্দোলন চলবে।

কোনো অবস্থাতেই বর্তমান সরকারকে মেনে নেওয়া হবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

অন্যদিকে, সহিংসতা বন্ধে সরকার আরও কঠোর হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

একমাত্র ভারত ও চীন ছাড়া বিশ্বের আর কোনো দেশ বর্তমান সরকারকে বৈধতার সমর্থন না দিলেও আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনার সকল ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই পাকাপোক্ত করে ফেলেছে।

নিজেরাই সরকারি দল আবার নিজেরাই বিরোধী দল হওয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার ঝড়ও উঠছে। সকল সমালোচনা উপেক্ষা করে দেশের উন্নয়নে একমাত্র আওয়ামী লীগকেই ক্ষমতায় থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘মন্ত্রীরা নিজেদের ওপর রিফ্লেকশান ফেলার জন্যই এমন বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।’ আবার কেউ কেউ সরকারের মেয়াদ সম্পর্কে ভীত হয়ে এমন বক্তব্য দিচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন  তিনি।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ