বৃটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিশেষ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট (ইপি) এবং বৃটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে। বৃহস্পতিবার এ বিশেষ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে সোমবার হাউস অব কমন্সে বাংলাদেশের নির্বাচন, সহিংসতা ও নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি বিষয়ে বাংলাদেশ-বিষয়ক পার্লামেন্টারি গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান অ্যান মেইন সাতটি প্রশ্ন উত্থাপন করেন।
প্রশ্নের জবাবে বৃটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিউ রবার্টসন জানিয়েছেন, বাংলাদেশে অংশগ্রণমূলক নতুন একটি নির্বাচনের জন্য নতুন সরকারসহ সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিএনপির চেয়ারপারসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঢাকায় বৃটিশ হাইকমিশনার কথা বলেছেন, যাতে জরুরি ভিত্তিতে ভবিষ্যতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে একযোগে কাজ করার জন্য তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অর্ধেকের বেশি আসনে ভোটাররা ভোট দেওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় এবং অন্য অধিকাংশ আসনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতো বৃটেনও হতাশ হয়েছে।’
এছাড়া গত ৫ জানুয়ারির ভোটে কম সংখ্যাক ভোটারের উপস্থিতি ও অর্ধেকের বেশি আসন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন থাকার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সাতটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এগুলো হলো-
১. নির্বাচন কেন্দ্র করে সহিংসতা, বিশেষ করে নারী-শিশু, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করতে হবে।
২. সংঘাত-সহিংসতা বন্ধ করে সংকট উত্তোরণের পথ বের করতে বাংলাদেশে সব পক্ষকে কার্যকর আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো।
৩. সব পক্ষকে এমন একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর আহ্বান জানাতে হবে, যাতে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পথ তৈরি হয়; স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হয় এবং বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থকেই সবার আগে স্থান দেয়া যায়।
৪. ক্ষমতার বাইরে থাকা দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতার ও কারাবন্দি রাখার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করতে হবে এবং গুরুতর সহিংসতার ঘটনায় বিরোধী দলের (গত সংসদের) জড়িত থাকার কঠোর নিন্দা জানাতে হবে।
৫. গণগ্রেফতার বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাতে হবে, যাতে সবাই শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন, জমায়েত হওয়া বা মত প্রকাশের অধিকার ভোগ করতে পারে।
৬. ঝুঁকিতে থাকা জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা বাড়াতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাতে হবে।
৭. বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাতে হবে, যাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষীদের সুরক্ষা দিতে একটি কার্যকর ব্যবস্থা তারা নেয়।