মার্কিন কূটনীতিকদের জীবনসঙ্গীর তথ্য চেয়েছে ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নিউইয়র্কে ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়েকে গ্রেপ্তার ও হেনস্তা নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক টানাপোড়েন শেষ হয়েছে। তাই বলে ভারতে থাকা মার্কিন কূটনীতিকদের বাড়াবাড়ির বিষয়টি কঠোর হাতে দমন থেমে নেই।
এরই অংশ হিসেবে দিল্লি, মুম্বাই ও চেন্নাইয়ে আমেরিকান স্কুলে চাকরি নেওয়া মার্কিন কর্মকর্তার স্ত্রী বা স্বামীর বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত কোনা তথ্য দেয়নি, এমনকি মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে চাকরি করে এমন—ভারতীয় নাগরিকদের বেতন-কাঠামো সম্পর্কে কিছু জানায়নি।
আজ বৃহস্পতিবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে জানানো হয়, গৃহকর্মীর ভিসা আবেদনে মজুরি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং তাঁকে চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক না দিয়ে বেশি কাজ করানোর অভিযোগে গত ১২ ডিসেম্বর নিউইয়র্কে ভারতীয় কনস্যুলেটের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। ভারত দেবযানীর কূটনৈতিক দায়মুক্তি বা ছাড়ের দাবি পরিত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এরই প্রেক্ষাপটে মার্কিন ফেডারেল আদালতের গ্র্যান্ড জুরি দেবযানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের নির্দেশ দেন।
দেবযানীকে ‘হেনস্তা’ করার ঘটনায় ভারতজুড়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানায়। কিন্তু ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, দেবযানীকে বিচারের মুখোমুখি করার ব্যাপারে অনড় থাকে যুক্তরাষ্ট্র। এর জের ধরে দুই দেশের সম্পর্কে ব্যাপক তিক্ততার সৃষ্টি হয়। দুই দেশের সম্পর্কের এতটাই অবনতি হয় যে দেবযানীকে গ্রেপ্তারের ঘটনার পর দিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দেয়। নয়াদিল্লিতে মার্কিন দূতাবাসের চারপাশের নিরাপত্তা বাধা সরিয়ে নেওয়া হয়।
সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, দূতাবাস অঙ্গনে আজকের মধ্যে (১৬ জানুয়ারি) বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া যানবাহন চলাচলসংক্রান্ত বিধি অমান্য করলে দূতাবাসের গাড়িগুলোকেও দণ্ড পেতে হবে। একই সঙ্গে মার্কিন দূতাবাস প্রাঙ্গণে অবস্থিত ক্লাব বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার অনুরোধ জানানোর পর গত সপ্তাহে পরিবার ছেড়ে দেশে ফেরেন দেবযানী। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের নির্দেশ মেনে নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাসের তাঁর সমমর্যাদার একজন কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপের পর দুই দেশের মধ্যে চলমান বিবাদের অবসান হবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র।