গ্রেফতার পাকিস্তানি জঙ্গিরা ১২ ধরনের বোমা বানাতে পারে
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার পাকিস্তানি জঙ্গিরা গাড়িবোমা ও গ্রেনেডসহ ১২ ধরনের বোমা বানাতে পারে। ইতোপূর্বে তারা তথাকথিত জেহাদি যুদ্ধে অত্যাধুনিক অস্ত্র চালনা করেছে। তাদের পরিকল্পনা ছিল দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে নাশকতামূলক ঘটনা ঘটানো, কিন্তু গোয়েন্দা নজরদারি থাকায় তারা তাতে ব্যর্থ হয়েছে।
সোমবার দুপুর সোয়া ১২টায় মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপি (ডিবি) জয়েন্ট কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম।
জয়েন্ট কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃত ফখরুল প্রায় দেড় মাস পূর্বে বাংলাদেশে আসে এবং মেহমুদ (২৬) ও উসমান (২৩) আরও আগে একটি গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়ে এক মাস পূর্বে জামিনে মুক্তি পায়। মুক্তিপ্রাপ্ত ওই দুজন পাকিস্তানে ফিরে যেতে চেয়েছিল কিন্তু ফখরুল বিশেষ অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে বাংলাদেশে এসে তাদেরকে সেখানে ফিরে যেতে দেয়নি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বা পরে বাংলাদেশে ধ্বংসাত্মক ঘটনা ঘটানোর জন্য জঙ্গিরা সংঘবদ্ধ হচ্ছে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা অভিযানে নামে। এই পর্যায়ে তাদের গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
জয়েন্ট কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম আরও জানান, তারা পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানের সীমান্ত এলাকায় ‘তেহরিক-ই-তালিবান অব পাকিস্তান’র কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকার বোমা তৈরি, বোমা হামলা, বিভিন্ন প্রকার অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র, যুদ্ধের কৌশলের ওপর প্রশিক্ষণ নেয়। প্রশিক্ষণ গ্রহণের বিষয়ে উল্লেখিত জঙ্গি সংগঠনটির এক তরুণ নেতা তাদেরকে উৎসাহিত করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। পরবর্তী সময় তারা মায়ানমার ভিত্তিক ‘তেহরিক-ই-আজাদী আরাকান’ নামক একটি সংগঠনের ব্যানারে যুদ্ধ করার জন্য সংকল্পবদ্ধ হয় বলে তারা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা উর্দুভাষী হলেও উসমান ও ফখরুল কিছু কিছু বাংলা বলতে পারে। ফখরুল অপর দুইজনের গাইড হিসেবে টেকনাফ নিয়ে যাওয়ার জন্য কাকরাইলে অবস্থান করছিল। তারা স্বপরিবারে মায়ানমারের আরাকান রাজ্য থেকে বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তানে পাড়ি জমায়। পাকিস্তারি নাগরিকত্ব গ্রহণ করে বর্তমানে তারা পাকিস্তানে স্থায়ীভাবে বাস করছে।
জয়েন্ট কমিশনার আরও জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মেহমুদ ও উসমানের কাছ থেকে কোনো পাসপোর্ট-ভিসা পাওয়া যায়নি। হয়তো তারা ইচ্ছাকৃতভাবে পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছে বা কোনো গডফাদারের কাছে জমা রেখেছে। ফখরুল হাসানের কাছ থেকে পাকিস্তানি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হলেও তাতে ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি, সাউথ) কৃষ্ণপদ রায়, উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি, নর্থ) মো. নাজমুল আলম, উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. মাসুদুর রহমান ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট) মো. ছানোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি রোববার রাত সাড়ে ১০ টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীর গেইট থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বোমা তৈরির ম্যানুয়াল, সমরাস্ত্রের প্রশিক্ষণের তথ্য সম্পর্কিত একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।