রক্তস্নাত গণতন্ত্রের পথচলা নির্বিঘ্ন করতে হবে

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আবারও কঠিন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ভোটবিহীন নির্বাচনে জবর দখলকারী গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে পরাভূত করে আমাদের রক্তস্নাত বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিরোধী দলের প্রতি আচরণে কখনই সভ্য রীতি-নীতি অনুসরণ করেনি। তাই এই নব্য বাকশালি চেতনার জগদ্দল পাথরকে অপসারণ করার লক্ষ্যে জনগণ আজ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।

২৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ (বাকশাল প্রতিষ্ঠার দিন) উপলক্ষে শুক্রবার দলের সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

বাণীতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার উদ্দেশ্যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা ‘বাকশাল’ কায়েম করে। তারা জাতীয় সংসদে বিরোধী মতামতকে উপেক্ষা করে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে এক প্রকার গায়ের জোরেই এক অগণতান্ত্রিক মধ্যযুগীয় আইন পাশ করে।’

তিনি বলেন, ‘এই একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী মানুষের বাক-ব্যক্তি, চলাচল ও সমাবেশের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকার হরণ করে, সব সংবাদপত্র বন্ধ করে শুধু তাদের সমর্থক চারটি প্রকাশনা চালু রাখার ফরমান জারি করে। এর ফলে চিরায়ত গণতন্ত্রের প্রাণ শক্তিকেই তারা সেদিন নিঃশেষ করে দেয়।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশবাসীর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফলে অর্জিত মানুষের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে তারা ভূলুণ্ঠিত করে সমাজে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের ঘন অমানিশা ছড়িয়ে দেয়। এমনি এক দুঃসময়ে ৭৫’র ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সম্মিলিত শ্রোত-ধারায় শহীদ জিয়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে স্বেচ্ছাচারীতার লৌহ কপাট ভেঙ্গে তিনি গণতন্ত্রকে অর্গলমুক্ত করেন। এরপর শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা। নিশ্চিত হয় মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘বহু চক্রান্তের চোরাগলি দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী সরকার আবারও লুক্কায়িত বাকশালী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নতুন করে অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে মৃতপ্রায় অবস্থায় নিয়ে গেছে। এদের কাছে কখনই গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার নিরাপদ থাকেনি।’

বেগম জিয়া বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তাদের বিপদ টের পেয়ে তারা সংবিধান থেকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে জনগণের ভোটের অধিকারকেও হরণ করেছে এবং তামাশার নির্বাচনের মাধ্যমে এখন একক কর্তৃত্ববাদী শাসন দীর্ঘায়িত করার অলীক স্বপ্নে বিভোর হয়ে দেশের ঐক্য, সংহতি ও সার্বভৌমত্বকে সঙ্কটাপন্ন করে তুলতেও দ্বিধা করছে না।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ