মুখোমুখী বিচার বিভাগ এবং দুদক
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মোতাহার হোসেনের বিষয়ে দুদকের অবস্থান নিয়ে বিচার বিভাগ ও দুদক এখন মুখোমুখী। এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। তিনি বলেছেন, একটি মামলার রায় নিয়ে একজন বিচারকের বিরুদ্ধে দুদকের এমন অবস্থান কারো কাম্য নয়। এটা দুদকের কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিন্ম আদালতে চলা একটি মামলায় বিচারক মোতাহার হোসেন খালাস দেন। এর পর থেকেই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ওই বিচারকের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করে। তার বিরুদ্ধে দুদক মামলারও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি বলেছে, ‘বিচারক মোতাহার হোসেনের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত শুরু করার প্রক্রিয়া বিচার বিভাগের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ‘অশুভ উদ্যোগ’।’
আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এই উদ্যোগ বিচারক ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ও আতঙ্কের সৃষ্টি করবে বলে আমরা মনে করি। ওই মামলার বিচারক মোতাহার হোসেন অনেক চাঞ্চল্যকর মামলার রায় দিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিচারক মোতাহার হোসেন সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আলী হত্যাকাণ্ড মামলা, গাজীপুরে আইনজীবী সমিতিতের হামলার ঘটনায় চার আইনজীবীসহ আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা, রমনা মসজিদের ইমাম হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলায় তিনি আসামিদের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন।’ কিন্তু তারেক রহমানের মামলায় ‘যৌক্তিক রায়’ দেয়ায় ওই বিচারকের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, ‘বিচারক মোতাহার হোসেনের সম্পদের অনুসন্ধান প্রতিহিংসা পরায়ন বলে আমরা মনে করছি। বিচারক যদি তারেক রহমানকে সাজা দিতেন, তখন হয়তো ওই বিচারকের বিরুদ্ধে দুদক কোনো তদন্ত করত কি না, আমরা সন্দেহ প্রকাশ করছি। দুদকের পক্ষে রায় না হওয়ায় হয়তো ওই বিচারকের এ ভোগান্তি হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, নিন্ম আদালতে চলা একটি মামলার রায় নিয়ে একজন বিচারকের বিরুদ্ধে দুদকের এমন অবস্থান কারো কাম্য নয়। প্রকাশ্যে দুদকের এমন কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।