১০ ট্রাক অস্ত্রের রায়ে বাধা নেই চট্টগ্রাম আদালতে

truck weapon ১০ ট্রাক অস্ত্রসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বহুল আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনার মামলার বাদী আহাদুর রহমানকে পুনরায় জেরা করার এবং আদালত পরিবর্তনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের এই আদেশের পর আগামী ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণায় আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।

বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এক আদেশে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার তিন আসামির করা আবেদন খারিজ করে দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দিলিরুজ্জামান বলেন, এই মামলার সকল কার্যক্রম শেষ করে রায় ঘোষণার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। রায় ঘোষাণার আগে এমন আবেদন মামলাকে দীর্ঘায়িত করা ছাড়া আর কিছু নয়।

গত ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় দুটি মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ৩০ জানুয়ারি সময় নির্ধারণ করেন ওই আদালতের বিচারক এস এম মুজিবুর রহমান।

এ অবস্থায় মামলাটির প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ও বাদী (রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী) আহাদুর রহমানকে পুনরায় জেরার নির্দেশনা চেয়ে গত ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন করেন মামলার আসামি জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান।

এছাড়া আদালত পরিবর্তন চেয়ে আবেদন করেন এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রহিম ও সাবেক উপপরিচালক মেজর (অব.) এম লিয়াকত হোসেন। আসামিপক্ষে মোট চারটি আবেদন করা হয়।

গত ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্টে আবেদনকারীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, শাহ মঞ্জুরুল হক ও মো. আহসান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান শুনানি করেন।

আলোচিত এই ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ২০০৫ সালের ৬ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি  দেন আহাদুর রহমান। ২০০৬ সালের ১৭ জানুয়ারি তাকে জেরা করা হয়। এরপর ২০১২ সালের ১৫ নভেম্বর  পুনরায় আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি। কিন্তু এই সাক্ষীকে পুনরায় আসামিপক্ষে জেরার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে আকবর হোসেন খানের অভিযোগ।

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল গভীর রাতে সিইউএফএল জেটিঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্র ও গোলাবারুদ আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র ও  চোরাচালান আইনে পৃথক দুটি মামলা (অস্ত্র ও চোরাচালান) হয়। তদন্ত শেষে প্রায় দুই মাস পর মামলা দুটিতে অভিযোগপত্র (চার্জসিট) দেয় সিআইডি। স্থানীয় চোরাকারবারি হাফিজুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৪৪ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়।

কিন্তু বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের বিদায়ের পর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আদালতের নির্দেশে মামলা দুটির অধিকতর তদন্ত শুরু করে সিআইডি। এতে সাবেক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী, একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাসহ (বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা) নতুন ১১ জনকে আসামি করে ২০১১ সালের ২৬ জুন সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

নতুন করে যাদের আসামি করা হয়, তারা হলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক আবদুর রহিম, সাবেক পরিচালক শাহাবুদ্দিন আহমদ, সাবেক উপপরিচালক লিয়াকত হোসেন, সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এনামুল হক, সাবেক শিল্পসচিব নুরুল আমিন ও ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক শাখার প্রধান পরেশ বড়ুয়া।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ