বন্ধ কোম্পানির ভূতুড়ে আয়!
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বন্ধ রয়েছে কারখানাসহ সব ধরনের কার্যক্রম। অথচ বছর শেষে কোম্পানির আয় বাড়ছে! এমন ভুতুড়ে ঘটনা ঘটেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি মডার্ন ডায়িংয়ের বেলায়। চার বছর ধরে শুধু উৎপাদনই বন্ধ নয়; যন্ত্রপাতিও বিক্রি হয়ে গেছে। কোম্পানিটি লে-অফ (শ্রমিকের কর্মচ্যুতি) ঘোষণা করেছে। এরপরও আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস বাড়তে।
কোম্পানিটি মঙ্গলবার অনিরীক্ষিত অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে সেটি প্রকাশ করা হয়। তাতে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়কালে কোম্পানিটির ইপিএস দেখানো হয়েছে ৭৭ পয়সা। আগের বছর একইসময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭৪ পয়সা। অর্থাৎ ২০১২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের চেয়ে ২০১৩ সালের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ৩ পয়সা বেড়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৩ সালের নভেম্বর ডিএসইর এক সংবাদে বলা হয় ২০১০ সালের জানুয়ারি পর থেকে মডার্ন ডায়িংয়ের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। একই সময় থেকে কোম্পানিটি লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি এটির সব ধরনের যন্ত্রপাতিও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কোম্পানিটির কারখানা ভাড়া ভিত্তিতে তৃতীয় পক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদনে না থাকার কারণে ডিএসই কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটিকে নিম্ন শ্রেণিভুক্ত করেছে। ‘বি’ শ্রেণী থেকে এটিকে জাংক বা দুর্বল মৌলভিত্তির ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর শ্রেণী পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।
উৎপাদন বন্ধ ও লে-অফ ঘোষিত কোম্পানির আয় বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তবে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানানো হয়েছে।
শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ ও লে-অফ ঘোষিত কোম্পানির আয় বৃদ্ধির ঘটনা বিরল। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা কতটা আইনসঙ্গত ও যৌক্তিক তা নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন তার। কীভাবে এই আয় বাড়লো তাও জনসমক্ষে প্রকাশ হওয়া দরকার।