২০১৩ সালে ১৭৩৮ নারীর উপর হত্যা-নির্যাতন
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিগত ২০১৩ সালে এক হাজার ৭৩৮ জন নারী হত্যা ও বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৮১২ জনকে ধর্ষণ, ৮৭ জনকে হত্যা, ১৪ জন আত্মহত্যা, ৭০৩ জনকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন, ৪৪ জনকে এসিডদগ্ধ এবং ৭৮ জনকে গৃহকর্মী হিসেবে নির্যাতন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘নারীর মানবাধিকার-২০১৩’ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা এ তথ্য দেন। স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বক্তারা তথ্য উপস্থাপন করে বলেন, গত বছরে আমাদের দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। রানা প্লাজা ধসে নিহতদের মধ্যে নারীরাই বেশি ছিল। তাজরিন ফ্যাশনেও বেশির ভাগ নারীই পুড়ে মরেছে। নির্বাচনের আগে ও পরে যেসব সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করা হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে নারীরাই।
নারীদের অগ্রযাত্রায় আশঙ্কা প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, বিগত কয়েক দশকে রাজনৈতিক অঙ্গণে নারীদের যে পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে এসে সেটা বেশ হুমকির মুখে পড়েছে। বর্তমান সংসদে নারীদের সংরক্ষিত ৫০টি আসনের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দিতা করেছে মাত্র ২৭ জন নারী। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংসদে ৩৩ শতাংশ নারীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা এখনও পরাহতই মনে হচ্ছে। এর পাশাপাশি মৌলবাদী গোষ্ঠীর চ্যালেঞ্জ নারীর অগ্রযাত্রা ও অধিকারের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে গত বছরের হেফাজতে ইসলাম যে ১৩ দফা দাবি করে তা নারী অগ্রযাত্রার সম্পূর্ণ প্রতিবন্ধক। আর নারীদের প্রতি অর্থনৈতিক বৈষম্য তো আমাদের সমাজে আছেই।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান সংঘাতময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের যেমন কঠোর ভূমিকা নিতে হবে, তেমন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে সচেতন নাগরিক সমাজকেও। তাই এই মূহুর্তে সব ধরনের বৈষম্য, নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এদশের সব প্রগতিশীল শক্তিকে একজোট হয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উইমেন ফর উইমেন এর সাবেক সভাপতি সালমা খান, অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, ব্র্যাকের পরিচালক শিপা হাফিজা প্রমুখ।