বিরোধী দলগুলোকে কোণঠাসা করছে সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক , এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দেশের বিরোধী দলগুলোকে কোণঠাসা করতে যা করা প্রয়োজন, তার সবই করছে বাংলাদেশ সরকার। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অধিকাংশ আসামি বিরোধী দলের নেতা। এ ইস্যুটিকে গুরুত্ব দিয়ে লন্ডনভিত্তিক প্রভাবশালী সাপ্তাহিক ‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এ ‘অপরাধ এবং বাংলাদেশের রাজনীতি’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এতে বলা হয়, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে অসুস্থ করার জন্য এ পদক্ষেপগুলোই যথেষ্ট। প্রতিবেদনটির শুরুতে বলা হয়েছে, ১০ ট্রাক অস্ত্র পৌঁছানোর ১০ বছর পর অভিযুক্তরা শাস্তি পেলেন। বছরের পর বছর পার হলেও এ ইস্যুতে বাংলাদেশের আইনি ব্যবস্থা এক রকম থমকে ছিল।

অস্ত্র চালানের সঙ্গে জড়িতদের তখন চিহ্নিত করা হয়নি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও এ সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে তেমন কোন আগ্রহ দেখাননি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেয়।

এ বছরের ৩০শে জানুয়ারি অস্ত্র-পাচারের অভিযুক্ত ১৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়, যার অধিকাংশই ছিলেন বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা। এ অভিযোগে জড়ানো হয়েছে তারেক রহমানের নামও। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর যিনি অস্ত্রের চালানের বিষয়ে আগে থেকেই জানতেন, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। একে একে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামীসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে। সরকারি দমন-পীড়নে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার সহযোগী জামায়াতে ইসলামী কোন সহিংস আন্দোলনে নামতে পারছে না বলে উল্লেখ করা হয় এতে।

অন্যদিকে, একতরফা নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোশ মেজাজেই রয়েছেন। বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে ভারতও বেশ সন্তুষ্ট। নির্বাচনেও শুধু ভারতের স্বীকৃতি ছিল। ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারকরা  বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইসলামের নীতি অনুসরণকারী কোন দলকে ভারত সরকার ক্ষমতায় দেখতে চায় না। ভারতে অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীর সংখ্যা কমাতেও বদ্ধপরিকর তারা।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারও ভারত সরকারের লক্ষ্যকে কেন্দ্র করেই এগুচ্ছে। সে লক্ষ্যে নিজ দেশের বিরোধী দলগুলোকে কোণঠাসা করতে যা করা প্রয়োজন, তার সবই করছে ক্ষমতাসীন দল। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে অসুস্থ করার জন্য এ পদক্ষেপগুলোই যথেষ্ট। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাইরে থেকে প্রতীয়মান এ শান্ত অবস্থা কিছু সময়ের জন্য বলবৎ থাকবে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ