ঝিনাইদহে সশস্ত্র মিছিল করে ভোটারদের আ’লীগের হুমকি

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঝিনাইদহঃ  ‘ভোট দিতে যাবি না, পিঠের চামড়া থাকবে না।’ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের মধুপুর বাজারে আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে এভাবেই সাধারণ ভোটারদের হুঁশিয়ার করে দেওয়া হচ্ছ বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। শুধু ঝিনাইদহ সদর নয়, শৈলকূপা ও কোটচাঁদপুর উপজেলাতেও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

এদিকে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার ঝিনাইদহের পূর্বাঞ্চলে ভোটারদের আতঙ্কিত করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মহড়া চালায়। তারা আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী কনক কান্তি দাসের পোস্টার ব্যতিত বিএনপির আব্দুল আলীমের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে এবং প্রচারনায় বাধা দিচ্ছে। এসব ঘটনার প্রতিকার চেয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল আলীম শনিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

বিএনপির প্রার্থী আব্দুল আলীম লিখিতভাবে অভিযোগে উল্লেখ করেন, শনিবার সকালে মধুপুর বাজার থেকে সশস্ত্র মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। এসময় মিছিলকারীরা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। শুধু মিছিল ও পোস্টার ছিঁড়েই ক্ষান্ত হয়নি। তারা মোটরসাইকেলে মহড়া দিয়ে এলাকার বিএনপি সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিও দিয়েছে। মিছিলকারীরা বলছে, ‘তোরা ৫ই জানুয়ারি ভোট দিতে যাসনি, ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোট দিতে গেলে তোদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।’

শনিবার সকালের এই ঘটনার পর বিএনপি সমর্থক পর্যায়ের অনেক লোক এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

আব্দুল আলীম অভিযোগ করেন, শুধু পোড়াহাটি ইউনিয়ন নয়, বিএনপি সমর্থকদের এমন হুমকি ধামকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে সুরাট, হলিধানী, কালীচরণপুর ও পদ্মাকর ইউনিয়নেও। শুক্রবার কালীচরণপুর বাজারে বিএনপি সমর্থকরা পোস্টার লাগাতে গেলে তাদের নিকট থেকে পোস্টার ছিনিয়ে নিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে যাচ্ছেন কনক কান্তি দাস। যা সম্পূর্ণ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন।

তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী কনক কান্তি দাস বলেন, ‘তার কোনো কর্মী সমর্থক সশস্ত্র কোনো মিছিল করেনি। জনপ্রিয়তায় ঈর্শান্বিত হয়ে তারা মিথ্যাচার করছে।’

এসব বিষয়ে ঝিনাইদহের রিটার্নিং অফিসার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের লিখিত কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। তবে সকালে শুনেছিলেন পোড়াহাটি ইউনিয়নের মধুপুর বাজারে একটি জঙ্গী মিছিল হয়েছে।

জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন সুষ্ঠ হয় না, তার প্রমান পাওয়া যাচ্ছে উপজেলা নির্বাচনে। ফলে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত একশ ভাগ সঠিক ছিল। উপজেলায় যদি এই হয়, তবে দেশবাসীর কাছে তামাশা দেখার আর বাকি থাকলো কি।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ