জিপি মডেম ও সিম কিনে ভোগান্তি
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ কলরেট, ইন্টারনেট বিলের পর এবার মডেম ব্যবহারকারীদের সঙ্গেও প্রতারণা করে চলছে বহুজাতিক মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেড।
সম্প্রতি এই মোবাইল ফোন অপারেটরের মডেম ব্যবহারকারী একজন সাংবাদিক এ ধরনের প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন। বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের চিফ রিপোর্টার মহসিন হোসেন।
অভিযোগে তিনি জানান, প্রায় এক বছর আগে গ্রামীণফোনের একটি মডেমসহ সিম কেনেন তিনি। যার নম্বর ০১৭৮১৪৬৭৯২৮। তিন-চার মাস ব্যবহারের পর মডেমটি বেশ কিছুদিন অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। এরপর আবারও মডেমটি চালু করার জন্য তিনি ৩৫০ টাকা রিচার্জ করেন। কিন্তু বাসায় ফিরে দেখেন মডেমটিতে ইন্টারনেট সংযোগ পাচ্ছে না। পরে গ্রামীণের ১২১ নম্বরে অন্তত দশবার ফোন করে বিষয়টি তিনি জানান। তারা একেকজন নানা রকম তথ্য দিয়ে তাকে বিভ্রান্ত করেন।
ফোন করার পর গ্রামীণফোন কাস্টমার কেয়ারের কর্মকর্তা নিশিতা ওই সাংবাদিককে অনেকক্ষণ অপেক্ষায় রেখে জানান, লাইন ঠিক আছে এবং টাকাও যোগ হয়েছে। আবারও সংযোগ না পেয়ে ১২১ নম্বরে ফোন করেন তিনি। তখন সাবা নামের অপর এক কর্মকর্তা গ্রামীণফোনের আইটি কর্মকর্তার কাছে ফোনের লাইন ট্রান্সফার করে দেন। তিনিও জানান, মডেমের লাইন ঠিক আছে। সংযোগ না পাওয়ার কথা জানালে তিনি সিমটি খুলে পুনরায় চালু করতে বলেন। এই প্রক্রিয়ায়ও মডেমে সংযোগ পেতে ব্যর্থ হন তিনি।
পরে গ্রামীণফোনের পুরানাপল্টন কাস্টমার কেয়ার সেন্টার ও মতিঝিল কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন, সিমটি নষ্ট হয়ে গেছে। তারা এ বিষয়ে বিটিআরসিতে যোগাযোগ করতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে তারা জানান, বিটিআরসি সিমটি বন্ধ করে দিয়েছে।
মহসিন হোসেন তাদের বলেন, মডেম ও সিমটি তার নিজের নামে কেনা। কেনার সময় নিজের ছবি ও নাগরিক পরিচয়পত্রের ফটোকপি দেওয়া হয়। সিমটি অক্ষত অবস্থায়ই আছে। তাহলে বিটিআরসি কেন সিম বন্ধ করে দেবে? আর সিমটি নষ্টইবা কেন হবে? অবশ্য এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর প্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি। দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের একজন বলেন, এই নম্বরটি আপনার নামে রেজিস্ট্রেশন করা নেই। অন্য একজনের নামে রেজিস্ট্রেশন করা আছে।
গ্রাহকের অভিযোগ, যদি এই সিমটি অন্য কারও নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয়, তাহলে এই নম্বরে কল দিলে কল যাওয়ার কথা। কিন্তু তাও যাচ্ছে না। তিনি এ বিষয়টি বুঝতে পারছেন না বলে বিটিআরসির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, সাধারণত বিটিআরসি কোনো গ্রাহকের সংযোগ বন্ধ করে না। এ সংস্থাটি অপারেটরদের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সংযোগ বন্ধ বা বিচ্ছিন্ন করা অপারেটরদের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এক্ষেত্রে বিশেষ কোনো কারণে কোনো গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে তা তারা বিটিআরসিকে অবহিত করে থাকে বলেও জানান তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে গ্রামীণফোনের মানবসম্পদ উন্নয়ন শাখার পরিচালক কাজী শাহেদকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।