দিনে বিএনপি রাতে আ’লীগ করা নেতাদের স্থান হচ্ছে না

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ  বিএনপির মহানগর কমিটিতে এমন কিছু নেতা আছেন যারা দিনে বিএনপি ও রাতে আওয়ামী লীগ করেন। তাদের এবার বাদ দেওয়া হবে। এসব আর চলবে না। যারা কাজ করেননি তারা বাদ পড়বেন। দলের দুর্দিনে যারা কাজ করেছেন তারা নতুন কমিটিতে স্থান পাবেন। কোনো পকেট কমিটি করা হবে না।

সোমবার রাতে এক সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিলেন মহানগর নেতাদের। বৈঠক সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির যত আন্দোলন তার বেশিরভাগ আন্দোলনই মহানগর বিএনপির কারণে ব্যাথ হয়েছেন এমনটা মনে করেন দলের নেতাকর্মীরা।

বিশেষ করে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহতের ডাক দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ঢাকা অভিমুখে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কমর্সুচির ঘোষণা দেন।ওই কমর্সুচিতে ঢাকার বাইরের নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিতে আসলেও দেখা পাওয়া যায়নি ঢাকা মহানগরের দায়িত্বে থাকা কমিটির একজন নেতাকেও। সারাদেশে আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতাদের মধ্যে ছিল গাবাঁচানো ভাব।মহানগরের নেতাদের মোবাইল ফোনসহ যোগযোগ করার সব মাধ্যম ছিল বিছিন্ন।ফলে দিকহারা কর্মীরা শত চেষ্টা করেও এসব নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি বলে অনেকের অভিযো।

আন্দোলনে নিজেদের শক্তি দেখাতে ব্যাথতা, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কমিটি করতে না পারা, কমিটির নামে পকেট কমিটি করা এবং অর্থের বিনিময়ে কমিটিতে নেতৃত্ব পাইয়ে দেয়া, মহানগরের অনেক নেতার বিরুদ্ধে সরকারের সাথে আতাত করে চলার অভিযোগ ওঠে সাধারণ নেতাকর্মীর মধ্যে থেকে।

এছাড়া আন্দোলন কমর্সুচির সময় দলের সদস্য সচিবের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে না পাওয়ার অভিযোগে বিএনপির তৃণমুল থেকে দাবি ওঠে মহানগর বিএনপির কমিটি পুনর্গঠনের।

বিএনপির হাইকমান্ডও মহানগর বিএনপির কমর্কাণ্ডে চরম অসন্তোষ জানিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির নেতাদের সরাসরি সমালোচনা করেন। এমনকি তিনি ওই অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারপারসনের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি হাসিনার লোকদের মহানগরের দায়িত্বে রেখে আন্দোলন সফল করতে পারবেন না।

এসব কারণে নেতাকর্মীদের ক্ষোভ আর আন্দোলনে ব্যার্থতার দায়ে ঢাকা মহানগর কমিটি নতুনভাবে গঠনের সিদ্ধান্ত নেন বিএনপিরি হাইকমান্ড।

২৯ তারিখের মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচি সফলের দায়িত্ব ছিল ঢাকা মহানগর বিএনপির। কর্মসূচি সফল করতে এসব নেতা সর্ম্পূণভাবে ব্যার্থ হয়েছেন। যেখানে সারাদেশে আন্দোলন হয়েছে সেখানে ঢাকায় কিছুই হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ম্যাডাম বতর্মান মহানগর কমিটির ওপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ। আন্দোলনের ব্যাথতার জন্য তিনি সদস্য সচিব সালামকে শাসিয়েছেন। তার কোনো কথা ম্যাডাম এক রকম শুনতে চাননি। আব্দুস সালাম পুরনোদের আরেকবার সুযোগ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠনের কথা বললে ম্যাডাম এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কমিটি কীভাবে গঠন করা হবে বা করতে হবে সেটা বলার তুমিকে ? বড় বড় কথা বলো, কাজ তো করতে পারো না।দায়িত্ব দেওয়ার পর কী করেছো?দুই বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে এখনো মহানগরের পুর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারোনি। আর মহানগরে যেসব কমিটি গঠন করা হয়েছে; তা বেশিরভাগই করা হয়েছে পকেট কমিটি । এসব কমিটিতে অনেক পরিক্ষিত, সৎ ও যোগ্যদের স্থান দেওয়া হয়নি। বিনিময়ের মাধ্যমে কমিটি করা হয়েছে।এসব নেতারা সব ব্যাথ হয়েছে।তাই নতুন করে দলের সিনিয়র নেতাদের দায়িত্ব দিয়ে ঢাকা মহানগর কমিটি করা হবে।

তবে মহানগর কমিটি গঠন করার বিষয়ে সাধারণ নেতাকর্মীরা স্বাগত জানালেও তাদের মধ্যে সংশয় ও সম্দেহ রয়েছে পুনর্গঠন করার ক্ষেত্রে দলের প্রধানের নির্দেশনা মানা হবে কি-না।কারণ এর আগেও বলা হয়েছিল দলের কমিটিতে স্থান পাবেন ত্যাগী যোগ্য ও সৎ নেতারা। যারা দুর্দিনে দলের সঙ্গে কাজ করেছেন। কিন্তু তাদের কোনো মূল্যায়ন হয়নি। বরং যারা অযোগ্য তারা টাকার মাধ্যমে  কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন।

সুত্র জানায় ঢাকা মহা্নগরকে উত্তর আর দক্ষিণে ভাগ করার ব্যাপারে বিএনপির হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের মধ্যে আছে।ঢাকা মহানগরে এখন প্রায় আড়াই কোটি মানুষের বসবাস। একারণে মহানগরকে দু’ভাগে ভাগ করা হবে।

এ ব্যাপারে চেয়ারপারসন ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে বলে সুত্রটি নিশ্চিত করেছে।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ