স্বাধীনতা ঘোষণার ৪২ বছর
দুই যুগের শোষণ থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলনরত নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ১৯৭১
সালের ২৫ মার্চ রাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
কালরাতের সেই প্রথম প্রহরে ঢাকায় ‘অপারেশন সার্চলাইট’ অভিযান নামে গণহত্যা চালানো হয়। বাঙালিরা এর বিরুদ্ধে গড়ে তোলে প্রতিরোধ। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
২৫ মার্চ গণহত্যা শুরুর রাতেই পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এর মধ্যেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান তিনি।
অবশ্য তার আগেই ৭ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে এক জনসভায় কার্যত স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বাঙালির অবিসংবাদিত এই নেতা।
স্বাধীনতার এই দিনকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনে প্রস্তুত জাতি। এদিন সরকারি ছুটি। জাতীয় পর্যায়ে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি।
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন।
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া। সে লক্ষ্য অর্জনে সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্জন তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীনতার মূল লক্ষ্যে পৌঁছতে আমাদের আরো অনেক দূর যেতে হবে। এজন্য প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস।
জাতীয় সংসদকে সকল আলোচনা ও সমস্যা সমাধানের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে হবে বলেও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে স্বাধীনতার অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সর্বস্তরে পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনী যখন অতর্কিতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির উপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে তখন ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
দেশবাসীকে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বাংলাদেশের উন্নয়নবিরোধী যে-কোনো অপতৎপরতা নস্যাৎ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
বিরোধীদলীয় নেতা বাণীতে বলেন, একটি শোষণ, বঞ্চনাহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এদেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল।
তবে সেই লক্ষ্য অর্জন বারবার হোঁচট খেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আজও বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার এক গভীর চক্রান্ত চলছে। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার অপতৎপরতায় লিপ্ত দেশি-বিদেশি চিহ্নিত মহল।”
সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে গণতন্ত্রের পতাকাকে সমুন্নত রাখতে দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।