টিফিন খেয়ে পোশাক কারখানার ৩ শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, কালিয়াকৈর(গাজীপুর): জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় তিন শতাধিক শ্রমিক রাতের টিফিন খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। উপজেলার মৌচাক শিল্পাঞ্চলের তেলিরচালা এলাকার পূর্বাণী গ্রুপের করিম টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় তারা কর্মরত।
কারখানা কর্তৃপক্ষের সরবরাহকৃত টিফিন খাওয়ার আধা ঘন্টার মধ্যে এসময় শ্রমিকদের পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
আহতদের গাজীপুর সদর, কোনাবাড়ী, সফিপুর মৌচাকের বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। টিফিনের সাথে ডিমে বিষক্রিয়ার কারণে এঘটনা ঘটতে পারে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মৌচাক ফাঁড়ি ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক সৈয়দ আজহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কারখানার অসুস্থ্য শ্রমিক শিরিন, রবিউল, রোকেয়া জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা এলাকার পূর্বানী গ্রুপের করিম টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার তিন সহস্রাধিক শ্রমিকের মধ্যে ৫ শতাধিক শ্রমিককে অভার টাইমে কাজ করানোর জন্য রাখা হয়। রাত ৮টার দিকে কারখানা কর্তপক্ষের দেয়া টিফিনের প্যাকেটে একটি করে ডেনিস ও ডিম দেয়া হয়। টিফিন খাওয়ার পর শ্রমিকরা ফের কাজে যোগ দেন। কাজে যোগ দেওয়ার পর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কয়েকজন শ্রমিকের মধ্যে বমি ভাব ও পাতলা পায়খানা দেখা দেয়। এসময়ে বেশ কয়েকজন শ্রমিক মাটিতে লুটে পড়েন। অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে অল্প সমেয়ের মধ্যে প্রায় ৩ শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ অসুস্থ শ্রমিকদের দ্রুত গাজীপুর সদর হাসাপাতাল, কোনাবাড়ি সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কোনাবাড়ী শরীফ মেডিক্যাল, সফিপুর জেনারেল হাসপাতাল, মৌচাকসহ আশপাশের কয়েকটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর পরই কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে।
কারখানার এডমিন সেকশনের ক্লিনার হাসিনা বেগম জানান, ডিম ও ডেনিস খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ঝিমুনী দেখা দেয়। পরে শরীর দুর্বল হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তবে অন্যান্য দিনের চেয়ে ওইদিনের দেয়া ডিম খেতে একটু তেতু বলে মনে হয়েছে।
এব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে রাত ১০টার দিকে কারখানায় কোন কর্মকর্তা উপস্থিত নেই বলে গেইট থেকে সিকউিরিটিদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে খাবার নমুনা সংগ্রহ করে আনা হয়েছে। ডিম ও ডেনিস পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষে প্রয়োজনীয় শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিল্প-পুলিশের ওসি মোঃ জাকির হোসেন জানান, খাবারে বিষক্রিয়ার কারণে কারখানার প্রায় ৩ শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ১৪০ জনের মতো বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। অনেকেই সুস্থ হয়ে গেছে।