সাঈদীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে যুক্তি উপস্থাপন শুরু

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ  একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের শুনানিতে বৃহস্পতিবার ১৪নং অভিযোগের যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেছেন আসামী পক্ষ।

এ অভিযোগে সাঈদীর নেতৃত্বে হোগলাবুনিয়া গ্রামে হিন্দু পাড়ায় আক্রমণ এবং শেফালী ঘরামীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।

মামলার কার্যক্রম আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ শুনানি গ্রহণ করেন।

আইনজীবী এসএম শাহজাহান অসুস্থতার কারণে মামলার শুনানি ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেন। এ সময় আদলতে উপন্থিত ছিলেন সাঈদীর ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী, ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান।

যুক্তিতে অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান ১৪ নং অভিযোগ পড়ে শোনান।

তিনি বলেন, রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, সাঈদী ধর্ষণ করেননি। তখন একজন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, সে সেখানে ছিল কি-না। আরেকজন বিচারপতি বলেন, অভিযোগ হলো আসামীর নেতৃত্বে তারা সেখানে গেছে।

শাহজাহান বলেন, ট্রাইব্যুনালের রায়ে এ অভিযোগে মাওলানা সাঈদীকে দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের ১, ২, ৩ এবং  ২৩নং সাক্ষীর ওপর নির্ভর করেছে। কিন্তু সাক্ষ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায় রাষ্ট্রপক্ষের ১, ২ এবং ৩নং সাক্ষী হোগলাবুনিয়া গ্রামে হিন্দু পাড়ায় আগুন দেওয়া এবং ধর্ষণ করার বিষয়ে একটি কথাও বলেননি।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের ২৩নং সাক্ষী মধুসূদন ঘরামী ধর্ষণের বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরপর তিনি মধুসূদন ঘরামীর জবানবন্দি এবং জেরা থেকে পড়ে শোনান।

মুধুসূদন ঘরামী তার জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, তিনি সেসময় বাড়িতে ছিলেন না। তার স্ত্রী পরে তাকে বলেছে তোমাকে যে মুসলমান বানিয়েছে সে এসেছিল। তার স্ত্রী তাকে আরও জানিয়েছে, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট শাহজাহান বলেন, মাওলানা সাঈদীর পিতার নাম ইউসুফ সাঈদী। আর ট্রাইব্যুনালে জেরার সময় মধুসূদনকে সুস্পষ্টভাবে দেলোয়ার শিকদারের পিতা রসুল শিকদার উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হয়েছে, ১৯৭১ সালে অত্যাচারের কারণে দেলোয়ার শিকদারকে মুক্তিযোদ্ধা এবং এলাকার লোকজন মিলে মেরে ফেলেছে। জবাবে মধুসূদন বলেছেন, দেলোয়ার শিকদারকে পিরোজপুরে মেরে ফেলা হতে পারে।

এরপর অ্যাডভোকেট শাহজাহান মধূসূদনকে ট্রাইব্যুনালে  জেরার অংশ পড়ে শোনান  আদালতে।

প্রশ্ন: আপনার স্ত্রী তো কোনো মেম্বার চেয়ারম্যান, রাজাকার বা পিস কিমিটির লোকদের চিনতেন না? উত্তর: না।

প্রশ্ন: দেলোয়ার পরে নিজেকে শিকদার পরিচয় দিত?

উত্তরা: আগে শুনিনি এখন শুনছি।

প্রশ্ন: এ কথাগুলো আপনি ট্রাইব্যুনালে বলেছেন কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদত্ত জবানবন্দিতে বলেননি? উত্তর: নাও বলতে পারি।

আইনজীবী: স্ত্রী বলে, তোমাকে যে মুসলমান বানায় সে এসেছিল, তুমি পালাও। এ কথাও আপনি বলেননি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে?

সাক্ষী: স্মরণ নেই।

আইনজীবী: বাজারে মসজিদে বসে মুসলমান বানায় সে কথাও বলেননি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে?

সাক্ষী: মনে নেই।

আইনজীবী: আপনার নাম আলী আশরাফ আর কৃষ্ণ বাবুর নাম আলী আকবার রাখা হয় সেকথাও বলেননি?

সাক্ষী: স্মরণ নেই।

 

আইনজীবী: কাশেম আলী হাওলাদার ওরফে কাশেম  মাস্টার আপনার একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলে যায় এবং সাত মাস জেল খাটে?

সাক্ষী: হ্যাঁ।

আইনজীবী: কাশেম মাস্টার আপনার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে সে অভিযোগ আপনি করেন এবং সে কারণে তিনি জেলে যান?

সাক্ষী: সত্য নয়।

আইনজীবী: আপনার স্ত্রী শেফালী ঘরামী ভারতে চলে গেছে আপনার সাথে বিরোধের কারণে?

সাক্ষী: সত্য নয়।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ