আশরাফের বক্তব্য একদলীয় শাসন ব্যবস্থার ইংগিত

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ  ২০১৯ সালের আগে নির্বাচন নয়- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামে এই বক্তব্যকে ‘একদলীয় শাসন ব্যবস্থা’ প্রবর্তনের ইংগিত বলে মনে করে বিএনপি। একই সঙ্গে তারা আবারো সব দলের অংশগ্রহণে অতিদ্রুত নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছে।

চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে বৃহস্পতিবার রাতে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের টার্মিনালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘সৈয়দ আশরাফ সাহেবের বক্তব্যের যা বুঝি- এটাই তারা চাচ্ছে- এখানে অন্য কোনো দল ছাড়া নির্বাচনের নাটক করবে। তারাই সরকার গঠন করবে।’’

‘‘ এই বক্তব্য স্পষ্ট হয়েছে- তারা আবার দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চায়। দেশের মানুষ তা কখনোই মেনে নেবে না।’’

একই সঙ্গে বর্তমান সংকট উত্তরণে দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে সব দলের অংশগ্রহনের অতিদ্রুত নির্বাচন ব্যবস্থা করার দাবিও জানান ফখরুল।

বুধবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘‘ সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদকাল ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগে ক্ষমতা ছাড়ার কোনো ইচ্ছা আওয়ামী লীগের নেই। ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এই সংসদের মেয়াদ। ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির পর আরেকটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।”

এক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি কোনো চাপের কাছে আওয়ামী লীগ নতি স্বীকার করবে না বলেও দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন তিনি। “যতই প্রেসার আসুক। সংবিধান পরিবর্তন হবে না।”

বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটির এক শুনানির একদিন বাদেই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এই বক্তব্য দেন।

ওই শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল বাংলাদেশে সামনে রাজনৈতিক সঙ্কটের আশঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপিসহ সব দলকে নিয়ে আগাম নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে মির্জা ফখরুল চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান। সেখানে তিনি মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে গলার ধমনীতে রক্ত চলাচলে জটিলতার চিকিৎসা করান।

রাত ৯টার দিকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সিঙ্গাপুর এয়ার লাইন্সের বিমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। সঙ্গে তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগমও রয়েছেন।

বিমান বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল নিশা দেশাই বিসওয়ালের দেয়া বক্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা আগে থেকে বলে এসেছি-  ৫ জানুয়ারি দেশে নির্বাচন এদেশের জনগণ গ্রহণ করেনি। আন্তর্জাতিক বিশ্বও এই প্রহসনের নির্বাচন গ্রহণ করেনি। তারা মতামত দিয়েছে, সব দলের অংশগ্রহণের একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা।’’

‘‘ আমরা মনে করি, অতিদ্রুত সব দলের অংশগ্রহণের নির্বাচনের উদ্যোগ সরকারের নেয়া উচিৎ। এটা যত দ্রুত করা হবে, তা দেশের জন্য মঙ্গল হবে।’’

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে নতুন নির্বাচন প্রত্যাশায় বিরোধী দলের দাবিকে জোরালো করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই। আমরা সতের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। এদেশের মানুষ প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নেয়নি, বর্জন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশ স্বীকার করেছে, দেশে নির্বাচন হয়নি।’’

গত ১২ ফব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটিতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে দ্বিতীয় দফা শুনানি হয়। এই শুনানি যুক্তরাষ্ট্রের সহকারি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওবামা সরকারের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

বিমান বন্দর থেকে সরাসরি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ